পাইলস এর স্থায়ী চিকিৎসা । পাইলসের সবচেয়ে ভালো ঔষধ কোনটি জানুন

পাইলস এর স্থায়ী চিকিৎসা বা পাইলসের সবচেয়ে ভালো ঔষধ কোনটি এই নিয়ে আলোচনা করবো।কারণ অনেকে অর্শ বা পাইলস রোগের কথা বলতে দ্বিধা বা লজ্জা বোধ করেন। সঠিক সময় এই রোগের সঠিক চিকিৎসা না করালে সারা জীবন ভুগতে হয়। পরিণতি হিসেবে রেকটাম ক্যান্সার হতে পারে।

পাইলস বা অর্শ এমন একটি রোগ যাতে পৃথিবীর শতকরা ৮০ জনই এই রোগে ভোগেন। কিন্তু খুব কম মানুষই এর চিকিৎসা করান। সুতরাং খুব তরুণ অবস্থা থেকে এর চিকিৎসা করালে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আর সেই চিকিৎসাটি হলো পাইলস এর স্থায়ী চিকিৎসা । পাইলসের সবচেয়ে ভালো ঔষধ কোনটি তার বিবরণও নিচে দেওয়া হলো।

আরম্ভ

পাইলস রোগটির সাথে আমরা সবাই পরিচিতি। মলদ্বারের ভেতরে বা বাইরে চারপাশে শিরাগুলো ফুলে মটরদানা কিংবা আঙ্গুরের মতো ছোট ছোট টিউমার হলে তাকে অর্শ বা পাইলস বলে।সূতরাংপাইলস এর স্থায়ী চিকিৎসা কি এবং পাইলসের সবচেয়ে ভালো ঔষধ কোনটি তা আলোচনা হওয়ার দাবি রাখে। 

প্রধানত লিভারে এবং ধমনীতে রক্তাধিক্য হলে পাইলস হয়। অলস প্রকৃতির লোকের সারা দিন বসে বসে থাকা, ঘিয়ে ভাজা বা অধিক মসলা যুক্ত রান্না খাওয়া, অধিক কোথ দিয়ে পায়খানা করা। ঘন ঘন জোলাপের ওষুধ খাওয়া মলদ্বারের কৃমির অত্যচার এবং মা-বাবার এই রোগ থাকলে সন্তানেরও অর্শ হয়। অতএব, পাইলস এর স্থায়ী চিকিৎসা বা পাইলসের সবচেয়ে ভালো ঔষধ কোনটি বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

কিভাবে বুঝবো পাইলস হয়েছে

মলত্যাগে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ, জন্মগত দুর্বল ধমনী, দীর্ঘ দিনের কোষ্ঠ কাঠিন্য, দীর্ঘ দিনের কাশি বা ভারী বস্তু উত্তোলন জনিত মলত্যাগের সময় বাথ্যাহীন রক্তপাত বা ব্যথাযুক্ত রক্তপাত, মলদ্বারে চুলকানি, জ্বালাপোড়া বা মলদ্বার ফোলা বা বাহিরে বেরিয়ে আসা অনুভব করা ইত্যাদি হলো অর্শ বা পাইলস। সূতরাং কিভাবে বুঝবো পাইলস হয়েছে তা নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন।

কি খেলে পাইলস ভালো হয়

নিম্নোক্ত খাদ্যগুলো পাইলসের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখাতে সাহায্য করে। সূতরাং কি খেলে পাইলস ভালো হয় তা দেওয়া হল-

সবজি জাতীয় খাবার যেমন- ঢেঁড়স, বাঁধাকপি, শিম, লাউ, মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি পাইলসের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখাতে সাহায্য করে। অতএব বোঝা গেলো কি খেলে পাইলস ভালো হয়।

ফল জাতীয় খাবার যেমন- আপেল, কলা, পেয়ারা, নাশপাতি ইত্যাদি পাইলসের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখাতে সাহায্য করে। কি খেলে পাইলস ভালো হয়।

শস্য জাতীয় খাবার যেমন- ওটমিল, ব্রাউন রাইস, চিড়া ইত্যাদি পাইলসের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।


ডাল জাতীয় খাবার যেমন- বিভিন্ন ধরনের ডাল, বিশেষ করে মসুর এবং ছোলার ডাল ইত্যাদি। সূতরাং কি খেলে পাইলস ভালো হয় তা নিশ্চয় বোঝতে পেরেছেন।

প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করলে হজমে সাহায্য করবে এবং মল নরম থাকে। কি খেলে পাইলস ভালো হয় তা নিশ্চয় বোঝতে পেরেছেন।।

কি খেলে পাইলস ভালো হয় এটি জানার জন্য দইয়ের নাম স্মরণ করতে হয়। দই হজমে সহায়ক এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে ।

কি খেলে পাইলস ভালো হয় এর জন্য ছানার কথা মনে করা উচিত। এটি অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্য ঠিক রাখে।

অলিভ অয়েল খাওয়া মল নরম করতে সাহায্য করতে পারে এবং এটি হজমে সাহায্য করে।

পাইলস হলে কি করতে হবে

পাইলস হলে কি করতে হবে এর জন্য নিম্নোক্ত পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে যা আরামএবং উপশমে সহায়ক হবে। পাইলসের চিকিৎসা জন্য পাইলস হওয়ার কারণগুলো দূর করতে হবে। যেমনঃ

কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচতে বেশি বেশি আঁশ বা ফাইবারযুক্ত খাবার খতে হবে। আঁশযুক্ত খাবার যেমন শাকসবজি, ফলমূল, গোটা শস্য এবং বাদাম খাওয়ার চেষ্টা করুন। এগুলো মল নরম এবং মলত্যাগ সহজ করতে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ইসবগুলের ভুসি একটি কার্যকর ঔষধ।পানির অভাবে মল শক্ত হয় তাই প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।


মলত্যাগের সময় খুব জোরে চাপ দেয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। পায়খানা যাতে নরম এবং সহজে মলত্যাগ করা যায়, সেই দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।দীর্ঘ সময় ধরে টয়লেটে বসে থাকা বা চাপ প্রয়োগ করা যাবে না। এতে করে শিরার উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে পাইলসের সমস্যা বাড়তে পারে। সূতরাং পাইলস হলে কি করতে হবে তা বোঝতে পেরেছেন।

নিয়মিত হালকা ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করতে হবে। শরীরকে চলমান রাখতে হাঁটাচলা, স্ট্রেচিং, যোগব্যায়াম ইত্যাদির যেকোনটা বেছে নেওয়া যায়। কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে হাঁটাহাঁটি বা হালকা শরীরচর্চা কার্যকরি ভূমিকা রাখে। এটি অন্ত্রের গতিশীলতা বাড়াতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে। সূতরাং পাইলস হলে কি করতে হবে তা বোঝতে পেরেছেন।

মলত্যাগে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা উচিত না। পায়খানার চাপ আসলে তা আটকে রাখা উচিত না, সময়মতো টয়লেটে যান এবং প্রয়োজনে মলত্যাগ করুন। মল চাপ দিয়ে ধরে রাখবেন না, এতে শিরার উপর চাপ বেড়ে পাইলসের কারণ হতে পারে। টয়লেটে বসে ম্যাগাজিন, পেপার, মোবাইল ইত্যাদিতে মনোনিবেশ করা বাদ দিন।

অতিরিক্ত ওজন হলে কমিয়ে ফেলতে হবে। ওজন বেশি হলে পাইলস হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে, তাই পাইলস এর রোগীদের ওজন কমানোর পরামর্শ দেয়া হয়। সূতরাং পাইলস হলে কি করতে হবে তা বোঝতে পেরেছেন।

পাইলসের জায়গায় ঠাণ্ডা সেঁক দিলে আরাম পাওয়া যেতে পারে। ফার্মেসিতে পাওয়া যায় এমন কিছু ক্রিম ও মলম রয়েছে যা পাইলসের জ্বালাপোড়া কমাতে সাহায্য করে। যদি সমস্যা গুরুতর হয়, তবে ডাক্তার দেখানো উচিত। অনেক সময় ঔষধ বা অন্য চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে সার্জারি করতে হতে পারে।

পাইলস এর চিকিৎসা কোথায় ভালো হয়

পাইলস এর চিকিৎসা কোথায় ভালো হয় তা জেনে রাখা প্রয়োজন। পাইলসের চিকিৎসা বড় হাসপাতাল এবং বিশেষজ্ঞ কেন্দ্রগুলোতে ভালোভাবে করা হয়। যেখানে সার্জারি বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত থাকেন সেখানেই পাইলসের চিকিৎসা ভালো হয়। কয়েকটি প্রখ্যাত হাসপাতাল এবং ক্লিনিকের নাম উল্লেখ করা হল-
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, দেশের অন্যতম বড় সরকারি হাসপাতাল। যেখানে পাইলসের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা এবং সার্জারি ব্যবস্থা রয়েছে।

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, অত্যাধুনিক চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ আছেন। এখানে পাইলসের জন্য ভালো চিকিৎসা পাওয়া যায়।

এভারকেয়ার হাসপাতাল একটি বেসরকারি হাসপাতাল, যেখানে সার্জারির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা পাওয়া যায়। এখানে আধুনিক চিকিৎসা এবং লেজার ট্রিটমেন্টের সুবিধাও রয়েছে।

স্কয়ার হাসপাতালে উন্নতমানের চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে। এখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ আছেন যারা পাইলসের চিকিৎসা করে থাকেন।

ইউনাইটেড হাসপাতাল,এই বেসরকারি হাসপাতালে উচ্চমানের চিকিৎসা পাওয়া যায়। এখানে সার্জারি বিশেষজ্ঞরা চিকিৎসা করে থাকেন। এছাড়াও দেশে বিভিন্ন বড় সরকারি হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকেও পাইলসের উন্নত চিকিৎসা পাওয়া যায়।

বাংলাদেশে পাইলস এর চিকিৎসা খরচ কত

বাংলাদেশে পাইলস এর চিকিৎসা খরচ কত হবে তা বিভিন্ন কারণের উপর নির্ভর করে, যার মধ্যে রয়েছে রোগের তীব্রতা, প্রয়োজনীয় পদ্ধতির ধরন, হাসপাতালের অবস্থান এবং সার্জনের অভিজ্ঞতা ইত্যাদি।

পাইলসের তীব্রতা অপারেশনের খরচকে প্রভাবিত করতে পারে। পাইলসের গুরুতর ক্ষেত্রে ব্যাপক অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে, যার চিকিৎসা খরচ আরও বাড়িয়ে দেয়।

পাইলসের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় পদ্ধতির ধরণ খরচকে প্রভাবিত করতে পারে। হেমোরয়েডেক্টমি, রাবার ব্যান্ড লাইগেশন এবং স্ক্লেরোথেরাপিসহ পাইলসের চিকিত্সার জন্য বিভিন্ন অস্ত্রোপচারের পদ্ধতি রয়েছে। প্রতিটি পদ্ধতির খরচ পদ্ধতির জটিলতা উপর নির্ভর করে পরিবর্তন হতে পারে।

হাসপাতালের অবস্থান যেখানে অপারেশন করা হয় তা খরচকে প্রভাবিত করে। গ্রামীণ এলাকার হাসপাতালের তুলনায় শহুরে এলাকায় হাসপাতালগুলির খরচ বেশি হতে পারে।

সার্জনের অপারেশন করার অভিজ্ঞতা খরচকে প্রভাবিত করে। কম অভিজ্ঞ সার্জনের তুলনায় অধিক অভিজ্ঞ সার্জন তাদের চিকিৎসার জন্য উচ্চ ফি নিতে পারেন।

সাধারণভাবে, ঢাকায় পাইলস অপারেশনের খরচ ৩০,০০০ টাকা থেকে ১০০,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

পাইলসের সবচেয়ে ভালো ঔষধ কোনটি

পাইলসের সবচেয়ে ভালো এলোপ্যাথিক ঔষধ হচ্ছে, হেমোরয়েড পিলো, হেমোরয়েড ক্রিম, রেক্টাল সাপোজিটোরি ইত্যাদি।

"আইবুপ্রোফেন বা প্যারাসিটামল" পাইলসের ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

"হেমোরয়েডাল ক্রিম বা মলম" ব্যবহার করলে চুলকানি ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

"হাইড্রোকর্টিসন ক্রিম" সাধারণত ব্যবহৃত হয়, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার করা উচিত।

ফ্ল্যাভোনয়েড সমৃদ্ধ ঔষধ "ডায়োসমিন" রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে পাইলসের উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে।

"ল্যাক্সেটিভ" কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে এবং মল নরম রাখতে ঔষধটি সহায়ক হতে পারে।

পাইলসের সবচেয়ে ভালো হোমিওপ্যাথিক ঔষধ হচ্ছে নাক্সভূমিকা, সালফার,পডোফাইলাম,পালসেটিলা, পালসেটিলা,ইস্কিউলাস,কলিনসোনিয়া,কার্বোভেজ,কলিনসোনিয়া,হ্যামামেলিস,অ্যাসিডমিউর,অ্যালো,ইগনেসিয়া,হ্যামামেলিস,এব্রোটেনাম,ক্যাপসিকাম,এসিডনাইট্রিক,এমনকার্ব,আর্সেনিকএল্ব,একোনাইট,ইস্কুইলাসহিপ, এমন মিউর,ক্যালিকার্ব, এন্টিম ক্রড,হিসার সালফ,লাইকোপডিয়াম।

পাইলস এর চিকিৎসা ঔষধ এর নাম

পাইলস রোগের লেজার সার্জারি একটি কার্যকর তাৎক্ষণিক চিকিৎসা যা দু-এক দিনের মধ্যেই দীর্ঘমেয়াদি স্বস্তি দেয়।
সাধারণত, হেমোরয়েড পিলো, হেমোরয়েড ক্রিম, রেক্টাল সাপোজিটোরি ইত্যাদির ব্যবহারই সবচেয়ে পছন্দের চিকিৎসা।
ক্যালসিয়াম ডোবিসাইলেট, লিডোকেইন হাইড্রোক্লোরাইড এবং ডেক্সামেথাসন এসিটেট অয়েন্টমেন্ট প্রতিদিন ২ বার আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করা উচিত যা সকালে ও ঘুমানোর পূর্বে এবং মলত্যাগের পরে ব্যবহার করাই শ্রেয়।


পায়ুপথের ভিতরে হেমোরয়েড-এর ক্ষেত্রে এপ্লিকেটর দ্বারা অয়েন্টমেন্ট প্রয়োগ করতে হবে। পায়ুপথের বাহিরের হেমোরয়েড এবং পায়ুপথের চুলকানির ক্ষেত্রে অয়েন্টমেন্ট-এর একটি পাতলা প্রলেপ দিনে একাধিকবার ব্যবহার করতে হবে। চিকিৎসা সাধারণত ১-২ সপ্তাহ চিকিৎসা গ্রহণ করার পরও যদি উন্নতি সাধন না হয় অথবা অবনতি ঘটে এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসককে অবগত করতে হবে।

পাইলস এর মলমের নাম

পাইলসের জন্য বিভিন্ন ধরনের মলম পাওয়া যায় উপসর্গ অনুযায়ী ব্যবহার করা উচিত। পাইলস এর মলমের নাম নিচে দেওয়া হল-
Preparation H: যা চুলকানি, ব্যথা এবং ফোলাভাব কমাতে সহায়তা করে।
Anusol HC: যা প্রদাহ ও চুলকানি কমাতে সাহায্য করে।
Proctosedyl: ব্যথা উপশম এবং প্রদাহ কমাতে সহায্য করে।
Scheriproct: এটি কোর্টিকোস্টেরয়েড সমৃদ্ধ, যা প্রদাহ এবং চুলকানি কমাতে সহায্য করে।
Xyloproct: লিডোকেইন সমৃদ্ধ মলম যা ব্যথা উপশমে সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
Anovate Cream: এটি পাইলসের ফোলাভাব, চুলকানি এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
Pykure Ointment: এটি একটি ভেষজ মলম, যা ফোলাভাব ও ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।

অপারেশন ছাড়া পাইলস এর চিকিৎসা

উচ্চ ফাইবারযুক্ত খাবার যেমন শাকসবজি, ফল এবং পুরো শস্য বেশি পরিমাণে খাওয়া। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা। হালকা ব্যায়াম করা। দীর্ঘক্ষণ টয়লেটে বসে থাকা এড়িয়ে চলা উচিত।

ব্যথা কমানোর জন্য আইবুপ্রোফেন বা প্যারাসিটামল সেবন করা। Preparation H, Proctosedyl, Anusol ইত্যাদি মলম ব্যবহার করা। ডুলকোল্যাক্স বা অন্যান্য ল্যাক্সেটিভ ব্যবহার করা।

অপারেশন ছাড়া পাইলস এর চিকিৎসার জন্য পাইলসের সবচেয়ে ভালো হোমিওপ্যাথিক ঔষধ হচ্ছে নাক্সভূমিকা,সালফার,পডোফাইলাম,পালসেটিলা,ইস্কিউলাস,কলিনসোনিয়া,কার্বোভেজ,কলিনসোনিয়া,হ্যামামেলিস,অ্যাসিডমিউর,অ্যালো,ইগনেসিয়া,হ্যামামেলিস,এব্রোটেনাম, ক্যাপসিকাম, এসিড নাইট্রিক, আর্সেনিকএল্ব,একোনাইটন্যাপ,ইস্কুইলাসহিপ, ক্যালিকার্ব, এন্টিম ক্রড,হিসার সালফ,লাইকোপডিয়াম।

পাইলস এর হোমিও ঔষধের নাম

ইসকিউলাস হিপ(Aesculus Hip)
পাইলসের রোগীর কোমরে অত্যন্ত ব্যথা,রক্তস্রাব তেমন একটা হয় না। যদিও হয় অনেকদিন পরে অল্প। মলদ্বারে খোঁচানি, টাটানি ব্যথা, মলদ্বার চুলকায্‌,জ্বলে ইত্যাদি লক্ষণে ইহা উপকারী। সকালে ও সন্ধ্যায় অল্প জলে Aesculus Hip Q, ১০ফোঁটা করে সেবন করুন।


হ্যামামেলিস(Hamamelis)
মলত্যাগের সময় খুব রক্তপাত হয় ও সঙ্গে খুব ব্যথা অনুভব হয় এবং অত্যান্ত টাটানি ব্যথায় ও ফুলায় হ্যামামেলিস উপকারী। তাহলে সকাল সন্ধ্যা Hamamelis Q, ১০ ফোঁটা করে সেবন করুন। তবে বাহ্যিক ব্যবহার করতে পারবেন।

কলিনসোনিয়া(Collinsonia)
মলের সাথে রক্ত, মলদ্বারে প্রচুর ব্যথা ও জ্বালা, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটে গ্যাস জমে ইত্যাদি লক্ষণে ইহা উপকারী। সকালে ও সন্ধ্যায় অল্প জলে দিয়ে Collinsonia Q সেবন করুনঅথবা 30 শক্তি দিনে তিন বার,200শক্তি দিনে দুই বার সেবন করুন।


এমোন কর্ব(Ammon Carb)
রক্ত স্রাবীয় পাইলস একটি চমৎকার ওষুধ।মল অতি কষ্টে নির্গত হয়, রক্ত পড়্‌ মাল দ্বার চুলকায় মলত্যাগের সময় অর্শ বলি বাহির হইয়া পড়ে, ব্যথা করে এক্ষেত্রে এমোন কর্ব উপকারী। 30 অথবা 23 শক্তি দিনে দুইবার সেবন করবেন।

এসিড নাইট(Acid Nit)
মলদ্বারে যেন কাঁটা ফোটানো আছে এরকম মনে হয়। খিটখিটে মেজাজ, প্রস্রাবে তীব্র গন্ধ,মলদ্বার অত্যন্ত জ্বালা। সকাল সন্ধ্যা ২/৩ ফোঁটা.200শক্তি খালি পেটে সেবন করুন।


সালফার(Sulphur)
নানা প্রকার অর্শ রোগে এই ওষুধ ব্যবহার হয়ে আসছে। ডাক্তার কালির মতে সালফার 1m বা 10m প্রাতে একমাত্র সেবনে অর্শ রোগ অব্যর্থ ফল হয়।

নাক্স ভমিকা(Nux Vomika)
যারা অতিরিক্ত চা কফি খান, সারাদিন বসিয়া থাকেন,কোনো কাজ বা পরিশ্রম করেন না। তাদের অর্শে সকাল সন্ধ্যায় ২/৩ ফোঁটা30শক্তি খালি পেটে সেবন করুন।

মিলিফোলিয়াম(Millefolium)
যন্ত্রণাবিহীন অর্শ রোগ গুহ্যদ্বার হইতে টকটকে লাল রক্ত স্রাবে ইহা অব্যর্থ।সকালে ও সন্ধ্যায় অল্প জলে দিয়ে Millefolium Q,সেবন করুনঅথবা 30 শক্তি দিনে তিন বার,200শক্তি দিনে দুই বার সেবন করুন।

পাইলসের বায়োকেমিক ঔষধ

ক্যালকেরিয়া ফ্লোরিকামঃ ক্যালকেরিয়া ফ্লোরিকাম (12x, 30x) মলদ্বারের ব্যথা এবং ফিসার উপশমে এর কার্যকারিতার জন্য পরিচিত। এটি অন্ত্রের নীচের প্রান্তের কাছে তীব্র কালশিটে ফাটলগুলির চিকিৎসার জন্য বিশেষভাবে উপকারী। এই প্রতিকারটি অভ্যন্তরীণ পাইলসের জন্যও কার্যকর।

Ferrum Phosphoricum 3x: Ferrum Phosphoricum অসংযম, রক্তক্ষরণ এবং কনজেশন দ্বারা চিহ্নিত অর্শ্বরোগের চিকিত্সার জন্য দরকারী। এটি এই অবস্থার সাথে যুক্ত তাপ এবং লালভাব কমাতে সাহায্য করে, অস্বস্তি থেকে ত্রাণ দেয় এবং নিরাময় প্রচার করে।

Kalium Phosphoricum 3x: Kalium Phosphoricum স্থানীয় প্রদাহের সমাধান করে এবং মলদ্বারের অঞ্চলে তীক্ষ্ণ, ছিঁড়ে যাওয়া ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়। বাহ্যিক পাইলসের সাথে যুক্ত হঠাৎ এবং তীব্র ব্যথার জন্য এটি বিশেষভাবে কার্যকর।

Kalium Muriaticum 3x: কালিয়াম মুরিয়াটিকাম কালো, ঘন, ফাইব্রিনাস এবং জমাট রক্তপাতের সাথে হেমোরয়েডের চিকিত্সার জন্য কার্যকর। এটি রক্তপাত নিয়ন্ত্রণ করতে এবং পাইলসের আকার কমাতে সাহায্য করে, ব্যথা এবং অস্বস্তি থেকে মুক্তি দেয়।

পাইলস এর আয়ুর্বেদিক ওষুধ

পাইলস এর আয়ুর্বেদিক ওষুধ প্রাকৃতিক ভেষজ উপাদানের মাধ্যমে তৈরি পাইলসের উপশমে কার্যকরী কিছু ওষুধ ও উপাদান রয়েছে। যথাঃ ত্রিফলা,হরিতকি, অর্জুনা,গুগ্গুল,নিম,অলোক্সা, বিবিতকি ও শিলা হজম।

পাইলস এর হামদর্দ চিকিৎসা

হামদর্দে পাইলসের চিকিৎসার জন্য বেশ কিছু ভেষজ ও ইউনানী ঔষধ রয়েছে।যেমনঃ
১. রেকটিন ট্যাবলেট
২. মাজুন মুশিল
৩. সুরি রেক্টা
৪. সাফুফ মুমসিক
৫. ইসাবগুলের ভূষি
৬. কুষ্তা খার
৭. মাজুন মোলায়েন

পরিশেষ

পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে,পাইলস এর স্থায়ী চিকিৎসা এবং পাইলসের সবচেয়ে ভালো ঔষধ কোনটি সবগুলো প্রশ্নের উত্তর উপরে আলোচনা করা হয়েছে। এইসব ঔষুধ গুলো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ছাড়া নিজে নিজে ব্যবহার করতে পারেন। তবে অভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা নিন, সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।














এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url