কম বয়সে ধনী হওয়ার উপায়
ধনী হওয়ার বাসনা সবারই।ধনী হতে কে না চায়? চাকরি অথবা ব্যবসা যে পেশারই মানুষ থাকুক না কেন, সবার পক্ষে ধনী হওয়া সম্ভব নয়। তবে কম বয়সে ধনী হওয়ার উপায় জানা দরকার।আমরা ধনী হওয়ার আশা যদি নাও করি,তবুও তুলনামূলক বেশি সম্পদের মালিক হতে চাই। তবে কম বয়সে ধনী হওয়ার উপায় জানতে হবে এবং জীবনের অনেক অভ্যাস বদলে ফেলতে হবে।
সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক সংকট চলছে,তবুও শীর্ষ ধনীরা আরও ধনী হচ্ছে। বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের সম্পদের পরিমাণ আরও বেড়েছে। তাই ধনী হওয়ার জন্য ভাগ্যের ওপর নির্ভর না করে, বরং কম বয়সে ধনী হওয়ার উপায় জেনে নিজস্ব মেধা আর শ্রমের সমন্বয়ে ধনী হওয়া সম্ভব। সূতরাং আসুন জেনে নেই কম বয়সে ধনী হওয়ার উপায়।
আরম্ভ
রায়ান বলেন, ধনী হওয়াটা একটা আর্ট। এ আর্ট যারা জানে না তারই গরিব। অংক আর লজিকে ভালো হলেই ধনী হওয়ার রাস্তাটা সহজে খুঁজে পাওয়া যায়।যারা অংকে খুবেই দুর্বল তাদের জন্য লাভের একটি সহজ অংকও কষে দিয়েছেন।
তাঁর বইতে লিখেছেন, বছরে কোটিপতি হতে একটি প্রোডাক্টকে ১০ টাকা লাভে বিক্রি করে ১০ লাখ মানুষের কাছে বিক্রি করুন। বছরে কোটিপতি হয়ে যাবেন। এটি কম বয়সে ধনী হওয়ার উপায় এর মধ্যে অন্যতম।তো কি বুঝলেন, ধনী হওয়া আসলেই একটা দারুণ আর্ট বা শিল্প।
কম বয়সে ধনী হওয়ার উপায়
- স্বপ্নকে অনুসরণ করুনঃ
এই সুন্দর পৃথিবীতে একজন মানুষের বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল স্বপ্ন দেখা। একবার চিন্তা করে দেখুন, যে মানুষটি আজ বেঁচে আছে সে কোনো না কোনোভাবে একটি বা একাধিক স্বপ্নকে সামনে রেখেই বেঁচে আছে।যে স্বপ্ন দেখে না সে মৃত মানুষ!স্বপ্ন পূরণ হয়, যদি কেউ তা হৃদয়ে লালন করে। আর স্বপ্ন তো বড় করেই দেখতে হয়। বড় স্বপ্ন দেখলে ছোট স্বপ্নগুলো এমনিতেই বাস্তবায়ন হয়।
- প্রতিদিন শেখুনঃ
নিজেকে দক্ষ করে তুলুন।অধিকতর যোগ্য করে তুলুন।এর কোনো বিকল্প নেই। প্রতিদিন কিছু সময় নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করুন। পুরনো শিক্ষাকে ঝালাই বা আপডেট করে নিন। একটা গাছ ধরে বসে থাকলে চলবে না।সফল মানুষরা প্রতিদিনই নতুন কিছু শেখার চেষ্টা করেন। ৮৮ ভাগ ধনী লোক প্রতিদিন বেশি সময় কঠোরভাবে জানতে এবং নিজেকে শিক্ষিত করতে ব্যয় করেন।
- চিন্তা নিয়ন্ত্রণ করুনঃ
আপনি বড় চিন্তা করতে পারেন। আপনার একটি বড় কল্পনা শক্তি আছে। আপনি যা কিছু করছেন তার মালিক আপনিই। ৯১ ভাগ ধনী ব্যক্তি নিজেই সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী।
- দায়িত্বশীল হনঃ
দায়িত্বজ্ঞান থেকে আপনি লজ্জা পান না। বস্তুত আপনি সুযোগ খোঁজেন, যা আপনাকে আরো দায়িত্ববান করে।যে তার নিজ দ্বায়িত্ত্বে অবহেলা করে সে তার অধিকারে অধিকারী নয়। দ্বায়িত্বহীন ব্যক্তি একজন অপরাধী৷ যে দিন থেকে কেউ দায়িত্ব নিতে শুরু করবে সেদিন থেকে তার জীবন পরিবর্তন হতে থাকবে।
- ঝুঁকি গ্রহণ করুনঃ
মার্কিন অর্থনীতিবিদ হলের মতে উদ্যোক্তার সর্বপ্রধান কাজ হল ঝুঁকি গ্রহণ। উদ্যোক্তার মুনাফা হল ঝুঁকি গ্রহণের পুরস্কার।আপনি সতর্ক এবং ঝুঁকি নিতে বেপরোয়া নন। সতর্ক ঝুঁকি গ্রহণকারী তাদের বাড়ির কাজ করেন, নতুন ধারণা এবং উদ্যোগ তাদের একটি ব্যবসার মধ্যে চালু করার আগে ঝুঁকি নিতে তারা দক্ষতা এবং জ্ঞানকে কাজে লাগান।
- পদক্ষেপ নেনঃ
আপনি কোনো পদক্ষেপ নিতে ভীত নন। সফলতার জন্য আপনাকে পদক্ষেপ নিতেই হবে।শুধু চিন্তা করলে কখনোই সফল হওয়া যাবে না।ইহাই ধনী হওয়ার উপায়।
- ব্যর্থতা জয় করুনঃ
একবার ব্যর্থ হলে থেমে যাওয়ার উপায় নেই। ব্যর্থতাকে আপনি অভিজ্ঞতা অর্জন ছাড়া অন্য কিছু হিসেবেই দেখছেন না। তাহলে বুঝবেন ধনী হওয়া যাবে। এটি কম বয়সে ধনী হওয়ার উপায়।
- আউটওয়ার্ক করুনঃ
ধনী ব্যক্তিরা দিন, সপ্তাহ, মাস এবং বছরব্যাপী কাজ করতে ভীত নন। ধনী ব্যক্তিরা সপ্তাহে গড়ে ১১ ঘণ্টা বেশি কাজ করেন।কম বয়সে ধনী হওয়ার উপায় এর মধ্যে এটি গুরুত্বপূর্ণ।
- দৃঢ়সংকল্প করুনঃ
লক্ষ্য পূরণের জন্য ক্রমাগত দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হতে হবে এবং লক্ষ্যের পেছনে ছুটে জীবনে নিজেকে সামনে এগিয়ে নিতে হবে। ধনীদের ৮০ ভাগই লক্ষ্য কেন্দ্রীক। তারা লক্ষ্য অর্জনে অভ্যাস গড়ে তোলেন।
- প্রত্যাশাকে অতিক্রম করুনঃ
কম বয়সে ধনী হওয়ার উপায় জানার পাশাপাশি প্রত্যাশাকে অতিক্রম করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি অন্যদের প্রত্যশাকে অতিক্রম করার চেষ্টা করেন। তাহলে ধনী হওয়া যাবে।
- সামাজিক সম্পর্ক করুনঃ
আপনি যদি অন্যের জন্মদিনে ফোন করে বা অন্যের খোঁজ খবর নেন তাহলে আপনার যোগাযোগ বৃদ্ধি পাবে। আপনার মূল্যবান সম্পর্ক আপনার জন্য নানা দ্বার খুলে দেবে। সম্পর্ক আপনার কাছে অর্থের মতোই দামি।
- অন্যকে প্রাধান্য দিনঃ
লোকজন আপনাকে পছন্দ করে। তারা আপনার সঙ্গে কাজ করতে এবং ব্যবসা করতে পছন্দ করে। আপনি লোকদের উৎসাহী এবং আশাবাদী করে তোলেন।
- মিতব্যয়ী হনঃ
মিতব্যয়ী হওয়াটা ধনী হওয়ার অন্যতম উপায়। বিশ্বখ্যাত বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট বিলিয়ন ডলারের মালিক। তিনি নিজেকে অত্যন্ত মিতব্যয়ী বলে দাবি করেন। ১৯৫৮ সালে অল্প দামে যে বাড়িটি তিনি কিনেছিলেন এখনো সে বাড়িতেই বাস করছেন।
এ ছাড়া জীবন যাপনের জন্য সর্বদা সাধারণ উপকরণ ব্যবহার করতেই তিনি পছন্দ করেন। একইভাবে টাকা হলেই নানা বিলাসপণ্য ব্যবহার করে তা শেষ করতে হবে কিংবা ঘন ঘন গাড়ি-বাড়ি বদল করতে হবে এমন ধারণাকে তিনি অপছন্দ করেন।
- ভুল থেকে শিক্ষা নিনঃ
ভুল করা মানেই সব কিছু শেষ হয়ে যাওয়া নয়।মার্ক জাকারবার্গ শুরুতে একটি বড় ভুল করেছিলেন, তবে এ ভুলের কারণে তিনি যে হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন তা নয়। এ ভুলটি তিনি পরবর্তী সময়ে দ্রুত সংশোধন করে নেন। তিনি জানান, এ ভুলের কারণে হয়তো তাঁর কয়েক বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু এ ধরনের কোনো ভুল যেন আর না হয় সে জন্য তিনি সতর্ক হয়ে গেছেন।
- আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলুনঃ
যে বিষয়টি আপনার বিশ্বাস, সে বিষয়েই বিনিয়োগ করতে হবে। অন্যথায় বিনিয়োগ থেকে সঠিক ফলাফল পাওয়া যাবে না।জেফ বিজোস ২০১৩ সালে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা কিনে নেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, এতে তিনি ভালো করতে পারবেন। তাঁর সে বিশ্বাসকে তিনি বাস্তবে প্রমাণ করেন। তাঁর মালিকানায় ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা বর্তমানে ভালোভাবে চলছে।
- সঠিকভাবে অর্থের জোগানঃ
নগদ অর্থের প্রবাহ ছাড়া ব্যবসা চালু রাখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াতে পারে। হংকং এর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি লি কা-শিং অল্প বয়সে তাঁকে পরিবারের সহায়তার জন্য পড়াশোনা ছাড়তে হয়। তবে ২২ বছর বয়সে তিনি সফলভাবে প্রথম ফ্যাক্টরি চালু করতে সক্ষম হন।
- কর বিষয়ে জ্ঞানঃ
অধিকাংশ ব্যবসাতেই একটি বড় বিষয় হলো কর। আর এ বিষয়টিতে অন্যের ওপর নির্ভর করে সফল হওয়া যায় না। এ জন্য উদ্যোক্তাদের উচিত কর বিষয়ে যাবতীয় আইনকানুন জেনে নেওয়া। ধনী ব্যক্তিরা সর্বদা এসব বিষয় নিজেই বুঝে নিয়ে তারপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেন।
এ বিষয়ে ওয়ারেন বাফেট বলেন, বিনিয়োগ নির্ভর করে তা থেকে কতখানি লাভ পাওয়া যাবে তার ওপর। কোনো ক্ষেত্রে কর যদি বেশি হয় তাহলে সেখানে বিনিয়োগ না করাই ভালো।
- আয়ের একাধিক উৎস তৈরি করুনঃ
শুধুমাত্র চাকরি কিংবা একটি নির্দিষ্ট ব্যবসার ওপর নির্ভর করে থাকলে ধনী হওয়ার স্বপ্ন পূরণ সম্ভব নয়। আয়ের উৎস বাড়াতে হবে। সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে হবে। আশপাশের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বাড়তি আয় করা যায় কি-না, সেদিকে সবসময় লক্ষ রাখতে হবে।
এক্ষেত্রে চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করা যেতে পারে, অন্যান্য সম্পদ যেমন - জমি, ফ্ল্যাট, ঘর ইত্যাদি ভাড়া দিয়ে আয়ের উৎস বাড়ানো যায়। পাশাপাশি লভ্যাংশ দিচ্ছে, এমন যে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর শেয়ার বাজারে টাকা লাগানো যেতে পারে।
- খরচ কমাতে বাজেট তৈরি করুনঃ
মাসিক খরচ কমাতে একটি বাজেট তৈরি করা যেতে পারে। বাজেট থাকলে সহজেই প্রতিমাসের বা নির্দিষ্ট সময়ের সমস্ত খরচ এবং খরচ কমিয়ে টাকা জমানোর উপায়গুলো খুঁজে বের করা সম্ভব। বাজেট তৈরির ক্ষেত্রে প্রাধান্য থাকা উচিত। খরচ কমিয়ে টাকা সঞ্চয় এবং অন্য কোনো ব্যবসায় বিনিয়োগ করা।
- নিজের ওপর বিনিয়োগ করাঃ
দক্ষতা ও জ্ঞান বাড়াতে নিজের উপর বিনিয়োগ করতে হবে। অতিরিক্ত আয় করার জন্য যে মেধা ও জ্ঞান প্রয়োজন, তা বাড়াতে পড়াশোনা, ট্রেনিং, অথবা যে কোনো ব্যক্তিগত উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ করা যেতে পারে। প্রয়োজনে বিভিন্ন কর্মশালায় অংশ নেয়া এবং নতুন কোনো কিছু শিখতে কোর্সে ভর্তি হওয়া এগুলোর মাধ্যমে নিজের গুণাগুণ বৃদ্ধি করা। এতে ভবিষ্যতে আয় বাড়ানোর পথ আরও প্রশস্ত হয়।
- নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলুনঃ
যথেষ্ট সম্পদ বাড়াতে বা ধনী হয়ে উঠতে নিজস্ব ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানের কোনো বিকল্প নেই। স্থানীয় বাজারের চাহিদাগুলো খুঁজে বের করে, তা সমাধানের পথ খুঁজতে হবে। পরবর্তীতে এ বিষয়ের উপর একটা ব্যবসা দাঁড় করাতে পারলে, সেই ব্যক্তির এগিয়ে যাওয়া কেউ আটকাতে পারবে না।
- নিজের দক্ষতা বাড়ানঃ
স্টেফান বয়স ২০–এর মধ্যেই কর্মক্ষেত্রে ভালো দক্ষতা অর্জনের দিকে গুরুত্ব দিতে বলেছেন । তিনি মনে করেন,প্রতিটি কাজ থেকে অর্জন করা দক্ষতা পরবর্তী কর্মক্ষেত্রে আপনাকে অনেকটা এগিয়ে রাখবে।
প্রথমে নিজের পছন্দের কাজ দিয়েই কর্মজীবন শুরু করতে পারেন। পারিশ্রমিক পান বা না পান, কাজটা করতে থাকুন। পারিশ্রমিকের চেয়ে দক্ষতা অর্জনের দিকে বেশি নজর দিন। শুরুর সময়টা জ্ঞানার্জনের জন্য ব্যয় করুন।
- সম্ভাবনাময় ব্যবসায় নামুনঃ
স্টেফান পরামর্শ দেন, আর্থিক উন্নতির জন্য পুরোপুরি চাকরির ওপর ভরসা না করে সম্ভাবনাময় কোনো ব্যবসা শুরু করা উচিত। এমন ব্যবসা শুরু করুন, যা ক্রমেই আপনার আয় বাড়াবে, বিপরীতে ব্যয় রাখবে নিয়ন্ত্রণে। ৩০ বছরে পা দেওয়ার আগেই ব্যবসা শুরু করে ভালোভাবে দেখভাল করতে পারলে তা আপনার আর্থিক অবস্থার দ্রুত উন্নতি বয়ে আনবে।
স্টেফান আরও বলেন, যেকোনো ব্যবসায়ই ভালো করা সম্ভব, যদি অনলাইনে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন রিসোর্স (তথ্য–উপাত্ত) সঠিকভাবে কাজে লাগানো যায়।
- আয়ের একাধিক উৎস তৈরি করুনঃ
আয়ের একক উৎসের ওপর নির্ভর করাকে বেশ ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন স্টেফান। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টারনাল রেভিনিউ সার্ভিসের (আইআরএস) একটি গবেষণার ফলাফল টেনে স্টেফান বলেন, বেশির ভাগ ধনীর কমপক্ষে সাত ধরনের আয়ের উৎস থাকে।
তিনি বিশ্বাস করেন, আয়ের উৎসে বৈচিত্র্য আনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চাকরি, লভ্যাংশ, মূলধন অর্জন, রিয়েল এস্টেট ভাড়ার মতো বিভিন্ন রকমের উৎস থাকলে কম সময়েই আর্থিক সাফল্য ও স্থিতিশীলতা লাভ করা যায়। এ ছাড়া আয়ের আরও নতুন নতুন সুযোগও সৃষ্টি হয়।
- জীবন যাপনের খরচ নিয়ন্ত্রণে রাখুনঃ
জীবন যাপনের খরচ নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারে স্টেফান সাবধানী হতে বলেছেন। উদাহরণ দিতে গিয়ে বলেন, ‘ধরুন, কারও আয় ৪০ হাজার ডলার থেকে বেড়ে ৬০ হাজার ডলার হলো। পরে তা বেড়ে ৯০ হাজার ডলারে গিয়ে দাঁড়াল। আয় বাড়লেও সঞ্চয় সে হারে বাড়বে না, যদি কেউ জীবনযাপনের খরচ নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পারেন।
এ ক্ষেত্রে সমাধান হলো, জীবন যাপনে নিয়ন্ত্রণ এনে খরচ কমিয়ে ফেলা। আয় বাড়লেও খরচ যাতে না বাড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখা।
- দ্রুত বিনিয়োগ করুনঃ
সর্বাধিক লাভের জন্যে স্টেফান দ্রুত বিনিয়োগের দিকে গুরুত্ব দিয়েছেন বেশি। বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সময়ের উল্লেখযোগ্য প্রভাব আছে বলে তিনি মনে করেন। স্টেফান বলেন, ‘একজন ২০ বছর বয়সী ব্যক্তি ১ ডলার বিনিয়োগ করলে ৬৫ বছর বয়সে তা ২১ ডলারে গিয়ে দাঁড়াতে পারে। কিন্তু একই ব্যক্তি যদি ৩০ বছর বয়সে ওই ১ ডলার বিনিয়োগ করেন, তাহলে বয়স ৬৫–তে গিয়ে তা বেড়ে হবে মাত্র ১০ দশমিক ৬৮ ডলার।
- সর্বাত্মক চেষ্টা করুনঃ
বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে আপনি সহজেই ধনী হতে পারবেন না। এ জন্য প্রথমেই যে কাজটি করতে হবে তা হলো টাকা উপার্জন বাড়ানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা। আর এতে যে পথগুলো সফল হবে সে পথে উপার্জন বাড়ানোর জন্য ক্রমাগত চেষ্টা করতে হবে।
- লোক দেখানো বন্ধ করুনঃ
সামান্য কিছু টাকা হলে তা দিয়ে বিভিন্ন বিলাসদ্রব্য কেনা অভ্যাস বন্ধ করুন।পর্যাপ্ত টাকা না আসা পর্যন্ত দামি মোবাইল ফোন, ঘড়ি, গাড়ি ইত্যাদির পেছনে এক পয়সাও ব্যয় করা যাবে না। অর্থ ব্যয় করার বদলে তা জমিয়ে নতুন করে অর্থ উপার্জনের কাজে লাগান।
- বিনিয়োগ ক্ষেত্র বের করুনঃ
আপনার টাকা জমানোর মূল উদ্দেশ্য হবে তা বিনিয়োগ করা। আপনার যে টাকা জমবে তাই বিনিয়োগ করার পথ খুঁজুন।
- লাভ ছাড়া ঋণ নয়ঃ
সরাসরি আর্থিক লাভ হয় না, এমন ঋণ বাদ দিন। ঋণ নিয়ে একটি গাড়ি কিনতে হলেও আপনার চিন্তা করতে হবে, এ থেকে কী লাভ হবে? যদি ব্যবসাক্ষেত্রে বড় অঙ্কের আর্থিক লাভ আনতে পারে গাড়িটি, তা হলেই কেবল তা কেনা যেতে পারে।
- টাকাকে অগ্রাধিকার দিনঃ
বহু মানুষ আর্থিক স্বাধীনতা আশা করে কিন্তু একে বাস্তবে অগ্রাধিকার দেয় না। যদি বাস্তবে টাকাকে ভালোবাসেন তা হলে সে আপনার কাছে আসবেই। তবে সে জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
- বিশ্রাম বাদ দিনঃ
মানুষের মতো টাকা ঘুমায় না। এর নেই সাপ্তাহিক ছুটির দিন কিংবা অন্য কোনো বিশেষ দিবস। সারা বছর একটানা কাজ করে যায় টাকা। আর তাই টাকাকে ধরতে হলে আপনারও বিশ্রামের কথা ভুলে যেতে হবে। শুধু যে বিশ্রামটুকু না করলেই নয়, তাই করতে হবে।
- গরিব অবস্থাকে ভয় করুনঃ
অনেক ধনী মানুষ অতীতে গরিব ছিলেন। বিল গেটস বলেন, 'গরিব অবস্থায় জন্মগ্রহণ করা আপনার ভুল নয়। কিন্তু গরিব অবস্থায় মৃত্যুবরণ করাটা আপনার ভুল।' গরিব হওয়াকে ভয় পাওয়া দারিদ্র্যের বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে বহু ব্যক্তিকে উৎসাহিত করেছে।
- গুরু খুঁজে নিনঃ
মধ্যবিত্ত সমাজে ধনী হওয়ার কলাকৌশল নিজে নিজে রপ্ত করা অনেক কঠিন। এ ক্ষেত্রে একজন ধনী ব্যক্তির আন্তরিক পরামর্শ প্রয়োজন। আর এ কাজে উপযুক্ত ব্যক্তি খুঁজে নেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- বিনিয়োগ করুনঃ
আপনার হাতে আয়ের সম্ভাব্য যত উৎস আছে, তা একত্রিত করে সতর্কভাবে বিনিয়োগ করতে হবে। আর এই বিনিয়োগ থেকে পাওয়া অর্থ আবার বিনিয়োগ করতে হবে। এভাবে ক্রমাগত বিনিয়োগ করেই আপনার আর্থিক ভিত্তি সম্প্রসারিত হবে।
- বড় লক্ষ্য নির্ধারণ করুনঃ
অনেকেই লক্ষ্য নির্ধারণে বিচক্ষণতার পরিচয় দেয় না। এ কারণে তারা লক্ষ্যমাত্রাই অল্প করে ধরে রাখে। ফলে মূল উপার্জন এর চেয়েও কমে যায়। তাই লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে বিচক্ষণতার পরিচয় দিন, এক কোটির জায়গায় টার্গেট করুন ১০ কোটি টাকার। এ ক্ষেত্রে পুরো টাকাটা না পেলেও এর কাছাকাছি অন্তত পৌঁছাতে পারবেন।
পরিশেষ
কম বয়সে বিনিয়োগকারী হয়ে উঠা এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখা সম্পদ বাড়ানো বা ধনী হওয়ার জন্য কোনো নির্দিষ্ট বয়স নেই। সূতরাং কম বয়সে ধনী হওয়ার উপায় গুলো জেনে কাজ করুন।
আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url