টিউমার চেনার উপায় কিভাবে বুঝবেন টিউমার কিনা জেনে নিন
টিউমার চেনার উপায় বা টিউমার কি? সকলের জানা দরকার। কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধিই হলো টিউমার। বিস্তারিত বললে বলা যায়–শরীরের যেকোনো স্থানের কোষ সমূহ ধীরে ধীরে বা দ্রুততার সাথে অসামঞ্জস্য ভাবে বেড়ে ওঠাই হলো টিউমার। এটি মূলত অস্বাভাবিক টিস্যুর সমাবেশ, যেখানে কোষগুলো লাগাম ছাড়া অস্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বৃদ্ধি পেতে থাকে।
শরীরের কতটুকু কোষ মরে যাবে আবার কতটুকু কোষ নতুন ভাবে জন্ম নিবে– এটা মূলত কোষের ভেতরের কিছু নির্দেশনা বা নিয়মের উপর নির্ভর করে। কিন্তু যখন কোষের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় অর্থাৎ এই নিয়ম ভঙ্গ হয় তখনই মূলত কোন একটি জায়গায় অস্বাভাবিক টিস্যুর সমাবেশ ঘটে, যার ফলে সৃষ্টি হয় টিউমার। সূতরাং টিউমার চেনার উপায় কিভাবে বুঝবেন টিউমার কিনা বিস্তারিত জানাবো।
আরম্ভ
টিউমার হচ্ছে ইংরেজি শব্দ। এর বাংলা অর্থ উর্বুদ। শরীরের যে কোনো স্থানে কোষসমূহ ধীরে ধীরে বা দ্রুততার সঙ্গে অস্বাভাবিক ও অসামঞ্জস্যভাবে ফুলে ওঠাই হচ্ছে টিউমার। সহজ কথায় টিউমার হলো মূল দেহকোষের রূপান্তর বা নতুন কোষের সংযোজন। সূতরাং টিউমার কাকে বলে বা টিউমারের সংজ্ঞা কি টিউমার চেনার উপায় কিভাবে বুঝবেন টিউমার কিনা বিস্তারিত জানতে পারবেন, পড়তে থাকুন।
টিউমার কী? টিউমার মানে কি?
আমাদের শরীরে বিলিয়ন নয়, বরং ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন কোষ রয়েছে।একজন প্রাপ্তবয়স্কের দেহে গড়ে ৩০ট্রিলিয়নের মত কোষ থাকে। জন্মের সময় এর সংখ্যা চার শতাংশের এক শতাংশ হয়ে থাকে। এরপর কোষের ভেতর কিছু নিয়মে পুরনো কোষ মরে যায় নতুন কোষ জন্ম নেয়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে টিউমার কী যার সঠিক উত্তর দিয়েছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রবিউল করিম বলেন, টিউমার হচ্ছে শরীরের যেকোনো জায়গায় বা অঙ্গে কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি।
সাধারনভাবে বলা যায়, যখন এই কোষগুলো কোনো কারণে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে তখনই ত্বকের নিচে মাংসের দলা অথবা চাকা দেখা যায়, একেই টিউমার বলে। এই টিউমার বিনাইন বা ম্যালিগন্যান্ট হতে পারে।
টিউমার এর সহজ সংজ্ঞা কি?
টিউমার হলো একটি অস্বাভাবিক কোষের গোষ্ঠী যা শরীরে তৈরি হয় । শরিরে যদি টিউমার থাকে তবে এটি ক্যান্সার এমনটি নয়। অনেক টিউমার আছে যেগুলো ক্যান্সারযুক্ত নয়। টিউমার সারা শরীরে তৈরি হতে পারে। এটি হাড়, ত্বক, টিস্যু, গ্রন্থি এমনকি যেকোন অঙ্গে হতে পারে।
টিউমার কত প্রকার কি কি?
টিউমার তিন প্রকার।যথাঃ
১। হিস্টোমা বা কানেকটিভ টিস্যু টিউমার
২।সাইটোমা
৩।টেরাটোমা বা মিক্সড সেল টিউমার
হিস্টোমা টিউমার আবার দুই প্রকার।যেমন-
১।ক্যান্সারহীন বা বিনাইন
২।ক্যান্সারযুক্ত বা ম্যালিগন্যান্ট
- বিনাইন টিউমার
বিনাইন টিউমার তুলতুলে নরম হয় এবং শক্ত হয় না। খুব আস্তে আস্তে বৃদ্ধি পায়। এর কোনো আবরণ থাকে না। এর উপরের চর্ম আলাদা পৃথক মনে হয়। এ টিউমারের সংলগ্ন গ্রন্থিসমূহ আক্রান্ত হয় না। চাপ দিলে এতে কোনো যন্ত্রণা অনুভূত হয় না। সূতরাং টিউমার দেখতে কেমন হয় তা নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন।
- ম্যালিগন্যান্ট টিউমার
ম্যালিগন্যান্ট টিউমার শক্ত হয়। এটা খুব দ্রুত বড় হয়। এতে আবরণ থাকে। এটার উপরের চর্ম আলাদা পৃথক মনে হয় না। এই টিউমার সংলগ্ন গ্রন্থিসমূহ আক্রান্ত হয়। চাপ দিলে এতে যন্ত্রণা অনুভূত হয়। এতে আঘাত করলে বা অস্ত্রোপচার করলে ক্ষতি হয়। অস্ত্রোপচার করলে পরে প্রায়ই ক্যান্সার হতে দেখা যায়।
ম্যালিগন্যান্ট টিউমার অনিয়ন্ত্রিতভাবে ছড়িয়ে পড়ছে যা পার্শ্ববর্তী টিস্যুগুলিকেও আক্রমণ করে, অপরদিকে বেনাইন টিউমার যা বৃদ্ধি পেলেও তা নিজের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে ও পাশের টিস্যু থেকে নিজেকে আলাদা করে রেখে। ক্যান্সারের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করতে ম্যালিগন্যান্সি শব্দটির বহুলাংশে ব্যবহৃত।
টিউমার কোথায় কোথায় হয়
শরীরের বিভিন্ন স্থানে টিউমার বিভিন্ন নামে পরিচিত।যেমনঃ
১। নাক, জরায়ু প্রভৃতি শ্লৈষ্মিক ঝিল্লীর টিউমারের না প্যাপিলোমা
২।জরায়ু, পাকস্থলী প্রভৃতি স্থানের মাংসপেশির টিউমারের নাম মাইওমা
৩। চর্মের টিউমারের নাম এপিথেলিওমা
৪। পিঠ, কাঁধ প্রভৃতি স্থানে ফ্যাটিটিস্যু টিউমারের নাম লিপোমা
৫। বোনের কার্টিলেজের টিউমারের নাম কনড্রমা
৬।মাথার খুলি, মুখম-ল, নাসিকা গহ্বর প্রভৃতি স্থানে হাড়ের অস্থি টিউমারের নাম অস্টিওমা
৭। মস্তিষ্ক কোষের টিউমারের নাম গ্লাইওমা
৮।মস্তিষ্ক, লিভার প্রভৃতি স্থানে রক্ত নালিকার টিউমারের নাম হেমান জিওমা
৯।ঘাড়, জিহ্বা, বগল প্রভৃতি স্থানের লসিকা নালির টিউমারের নাম লিমফ্যানজিওমা।
১০। সাধারণত কম বয়সে টিউমার দেখা দেয় সার্কোমা ।
১১। ৪০ বছর বয়সের পর টিউমার দেখা দেয় কার্সিনোমা।
টিউমার চেনার উপায়
টিউমার শব্দটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত। টিউমার একটি আতঙ্কের নাম। কেননা এই শব্দটি শোনার সাথে সাথে আমাদের মাথায় ক্যান্সারের কথা ভেসে আসে। কিন্তু অনেকেই এটা জানেন না, টিউমার এবং ক্যান্সার সম্পূর্ণই আলাদা দুইটি শারীরিক সমস্যা তৈরি করে, এই দুইটি কখনোই শরীরে এক রকম প্রতিক্রিয়া বা সমস্যার সৃষ্টি করে না। তাই যারা টিউমার ও ক্যান্সারের পার্থক্য জানেনা তারা গুলিয়ে ফেলেন। এজন্য আমরা টিউমার চেনার উপায় সম্পর্কে জানবো।
- ক্যান্সারহীন বা বিনাইন টিউমার চেনার উপায়
১। একটি মাত্র আবরণ দ্বারা এই টিউমার আবৃত থাকে।
২। এটি শরীরের অন্য কোনো স্থানে ছড়ায় না।
৩। এটি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।
৪। সাধারণত অপারেশন করলে ঠিক হয়ে যায় আর বাড়ে না।
- ক্যান্সারযুক্ত বা ম্যালিগন্যান্ট টিউমার চেনার উপায়
১। এই টিউমার গুলো কোন আবরণ দ্বারা আবৃত থাকে না। যার ফলে তা অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বৃদ্ধি পায়।
২। এটি খুব দ্রুত বৃদ্ধি পায় এবং বড় হয়ে যায়।
৩। অগোছালোভাবে বৃদ্ধি হওয়ার কারণে শরীরে বিভিন্ন জায়গায় সংক্রমণ ঘটায়।
৪। শরীরের অন্যান্য স্থানে রক্তের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
৫। এই ধরনের টিউমার গুলো মূলত প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করলে ভালো হয়ে যায়। তবে পুনরায় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে,তাই দীর্ঘ সময় ধরে চিকিৎসা নিতে হয়।
ক্যান্সারযুক্ত বা ম্যালিগন্যান্ট টিউমারের লক্ষণ | টিউমার ক্যান্সারের লক্ষণ
ক্যান্সারযুক্ত বা ম্যালিগন্যান্ট টিউমার নিরেট বা শক্ত হয়। এটা খুব দ্রুত বড় হয়। এতে আবরণ থাকে না। এটার উপরের চর্ম আলাদা পৃথক মনে হয় না। এই টিউমার সংলগ্ন গ্রন্থিসমূহ আক্রান্ত হয়। চাপ দিলে এতে যন্ত্রণা অনুভূত হয়। এতে আঘাত করলে বা অস্ত্রোপচার করলে ক্ষতি হয়। অস্ত্রোপচার করলে পরে প্রায়ই ক্যান্সার হতে দেখা যায়।
ম্যালিগন্যান্ট টিউমার গুলো স্বভাবতই কোন আবরণ দ্বারা আবৃত থাকে না। আর তাই এটা অনিয়ন্ত্রিত ও অগোছালোভাবে বৃদ্ধি পায়। সূতরাং টিউমার থেকে কি ক্যান্সার হয়, প্রশ্নটির উত্তর হচ্ছে টিউমার থেকে ক্যান্সার হতে পারে।
ম্যালিগন্যান্ট টিউমার এর বৃদ্ধি পাওয়ার গতি অত্যন্ত বেশি। এই ধরনের টিউমার ক্যান্সারের সৃষ্টি করে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার কোথায় হয়, যার সঠিক উত্তর হচ্ছে শরীরে যেকোনো জায়গায় হতে পারে।
শরীরের অন্যান্য স্থানে রক্তের মাধ্যমেও ম্যালিগন্যান্ট টিউমার ছড়িয়ে পড়ে। বেশি ভাগ ক্যান্সারযুক্ত বা ম্যালিগন্যান্ট টিউমার প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করালে ভালো হয়ে যায়।এই টিউমারের ক্ষেত্রে পুনরায় হওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যায়। পাশাপাশি ম্যালিগমেন্ট টিউমার নিরাময়ের জন্য দীর্ঘ চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে।
টিউমারের হওয়ার কারণ কি | টিউমার কেন হয়
প্রাণীকোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হচ্ছে টিউমার। টিউমার উৎপত্তির কারণ সম্বন্ধে এখনো সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারে নাই। ইহা বংশগত কারণ অথবা আঘাতের কারণে এই রোগ হইতে দেখা যায়। যাই হোক হোমিও চিকিৎসায় অনেক টিউমার আরোগ্য হতে দেখা যায়। শরীরের ভিতরে কি কারণে হয় তা আজও প্রায় অজানা।
অনিয়ন্ত্রনীয় কোষবৃদ্ধি টিউমার সৃষ্টি করে । জেনেটিক ত্রূটি এর সম্ভাব্য কারণ । শরীরের ওপর কোন রাসায়নিক প্রভাবের বা তেজষ্ক্রিয় বিকিরনের ফলে জেনেটিক মিউটেশনের জন্যও টিউমার হতে পারে । আবার প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে অন্যান্য রোগের মত শরীরের যে কোন অংশ আক্রান্ত হতে পারে।
- জেনেটিকস কারণে
অনেক ক্ষেত্রে জিনগত কারণে টিউমার সৃষ্টি হয়। টিপি৫৩ নামক জিনের অস্বাভাবিক মিউটেশনের কারনে টিউমার কোষ তৈরি হয়।
- পারিবারিক কারণে
পরিবারের কাছের কোন আত্মীয়দের কোনো টিউমার থাকলে বংশধারায় সেই টিউমার হতে পারে।
- ত্রুটিযুক্ত জীবন-যাপনের কারণে
ধূমপান করা, মদ পান করা, মাংস বেশি খাওয়া, অতিরিক্ত ওজন হওয়া, কম শারীরিক পরিশ্রম করা ইত্যাদি কারণে শরীরে টিউমার উৎপন্ন হয়।
- লিঙ্গভেদে কারণ
টিউমার হওয়ার জন্য মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের শরীরে অনেক বেশি ঝুকি থাকে, কারণ হলো ছেলেদের অস্বাভাবিক জীবন যাপন।
- প্রজনন ও হরমনাল কারণ
বেশি বয়স পর্যন্ত সন্তান না নেওয়া, অনেক বেশি সময় পর্যন্ত জন্ম নিয়ন্ত্রণ ট্যাবলেট গ্রহন করা, বিভিন্ন হরমনাল থেরাপি দেওয়া সহ ইত্যাদি ব্যাপার শরীরে টিউমার হওয়ার জন্য দায়ী। মূলত এগুলো হচ্ছে মেয়েদের স্তন টিউমারের অন্যতম কারণ।
- কসমেটিক্স ব্যবহারের কারণে
শরীরে বেশি পরিমাণে বা দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন কেমিক্যালজাত কসমেটিকস পণ্য , যেমন পারফিউম, পাউডার, ক্রিম এসবের ব্যবহার শরীরে টিউমার হওয়ার জন্য দায়ী হতে পারে।
- ইনফেকশনের কারণে
ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থেকে দেহে টিউমার তৈরির সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে।যেমন; হেপাটাইটিস বি, এইচপিভি ইত্যাদি। এই ভাইরাসটি জরায়ু এবং অস্থির ক্যান্সারের জন্য দায়ী।
টিউমার কি ব্যথা হয়
আমাদের শরীরের মধ্যে অনিয়ন্ত্রিত মাংসপিণ্ড হচ্ছে টিউমার। এটা সাধারণত অনিয়ন্ত্রিত কোষ বৃদ্ধির মাধ্যমে ঘটে থাকে। এটা শরীরের অভ্যন্তরে বেড়ে ওঠে এবং শরীরের উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল থাকে। কিন্তু এই টিউমারের অভ্যন্তরে যে কোষগুলো থাকে সেগুলো আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকারক কোষ এবং সেই কোষের মধ্যে ক্যান্সারের জীবাণু থাকে।
শরীরে যে টিউমারগুলো থাকে তার মধ্যে বেশিভাগ ক্ষেত্রেই ক্যান্সারের ভাইরাস বহন করে এমন টিউমার আবিষ্কৃত হয়েছে। তবে কিছু টিউমার আছে যা ক্যান্সারের ভাইরাস বহন করে না যেগুলো মানুষের থাকলে কোনো সমস্যা হয় না, যেমন লাইপোমা টিউমার। তবে কিছু টিউমার ছাড়া প্রায় সব টিউমারে ব্যথা হবে।
আমরা যদি লাইপোমা টিউমারের কথা বলি সে ক্ষেত্রেও হালকা ব্যথা হতে পারে। আপনারা যদি খেয়াল করেন তাহলে এই টিউমার গুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চামড়ার নিচে এবং মাংসপেশির উপরে অর্থাৎ চামড়া ও মাংসের মাঝখানে নরম অংশে তৈরি হয় যেখানে চর্বির অবস্থান।
আরো অন্যান্য টিউমার যদি থাকে শরীরের উপরের অংশে তাহলে সেখান থেকে বোঝা যায় যে এগুলো হালকা হালকা ব্যথার সৃষ্টি করছে। তবে শরীরের অভ্যন্তরে যে টিউমার গুলো থাকে বিশেষ করে ব্রেন টিউমার থেকে শুরু করে পেটের বিভিন্ন অংশের টিউমার তাহলে সেই ক্ষেত্রে ব্যথার পরিমাণ বেশি হয়।
শরীরের অভ্যন্তরে যে টিউমার গুলো রয়েছে সেগুলো খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি পায় এবং তাদের অবস্থা অনেক শক্তিশালী হয়, যার কারণে শরীরে অনেক বড় ক্ষতি করতে পারে।
টিউমার থেকে কি পুজ বের হয়
টিউমার অনেক ধরনের হয়ে থাকে,যদি ব্যক্টেরিয়ার দিয়ে হয়ে থাকে তাহলে পুজ হয়ে থাকে।এ ছাড়া পুজ হওয়ার কোন কারণ নেই বলে অনেকের ধারণা। পূজ হওয়ার পূর্বেই হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিন। অপারেশন ছাড়াই হোমিও চিকিৎসাতে টিউমার দূর হয়ে যায়।
টিউমার হলে করনীয়
টিউমার ভালো করার ঘরোয়া উপায় বা টিউমার হলে করনীয় কি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলোঃ
- নিয়মিত স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণ করুণ
টিউমার হলে করনীয় হচ্ছে নিয়মিত পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য গ্রহণ করলে টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়। অনিয়মিত , অধিক তেলযুক্ত, গুরুপাক এবং অপরিষ্কার খাদ্য গ্রহণ হলো সকল রোগের মূল কারণ। তাই সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা অন্যতম একটি টিউমার ভালো করার ঘরোয়া উপায় বা টিউমার সারানোর ঘরোয়া উপায়।
- তামাকজাত দ্রব্য পরিহার করুণ
তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য শুধুমাত্র যে টিউমারের জন্য ক্ষতিকারক তা নয় বরং সমগ্র শরীরের জন্য ভীষণ ক্ষতিকারক। তাই সম্পূর্ণরূপে তামাক ও তামাকজাত দ্রব্য পরিহার করা টিউমার ভালো করার উপায় বা টিউমার সারানোর ঘরোয়া উপায় এর অন্তর্ভুক্ত।
- শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন
শারীরিকভাবে ফ্যাট হলে টিউমারসহ নানা ধরনের রোগ বাসা বাঁধতে শুরু করে।তাই শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে স্লিম দেহের কোন বিকল্প নেই। শরীরকে অতিরিক্ত ওজন থেকে বাঁচিয়ে রাখতে ব্যায়াম এর কোন বিকল্প নেই। সুতরাং শরীরকে টিউমার থেকে বাঁচিয়ে রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন। এটিও হতে পারে একটি টিউমার সারানোর ঘরোয়া উপায় বা টিউমার প্রতিরোধের ঘরোয়া উপায়।
- সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুন
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি শরীরের জন্য বিশেষ করে যাদের টিউমার রয়েছে তাদের জন্য ব্যাপক ক্ষতিকর। তাই যতটা সম্ভব সরাসরি সূর্যের আলোতে না যাওয়া উচিত । একান্তই যদি যেতে হয় তাহলে সানস্ক্রিন বা ঐ জাতীয় কোনো কিছু ব্যবহার করা উচিত। সুতরাং এটি একটি টিউমার সারানোর ঘরোয়া উপায় বা টিউমার প্রতিরোধের ঘরোয়া উপায়।
- নিরাপদ যৌন সম্পর্ক নিশ্চিত করুন
টিউমার ভালো করার ঘরোয়া উপায় বা টিউমার সারানোর ঘরোয়া উপায় এর গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় বৈধ ও নিরাপদ যৌন সম্পর্ক নিশ্চিত করা। কেননা, আমাদের দেহ ও মনের উপর শারীরিক সম্পর্কের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে। আর তাই অনিরাপদ অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক হতে পারে টিউমার ও অন্যান্য মারাত্মক রোগ ব্যাধির কারণ।
টিউমার প্রতিরোধক খাবার
সুস্থ জীবন যাপনের জন্য পরিমিত পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবারের বিকল্প নেই। আমাদের আশেপাশেই রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় উপাদানযুক্ত খাবার যা টিউমারের ঝুঁকি এড়াতে খাবার তালিকা অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
হলুদ,গ্রীন টি, বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার, মিষ্টি আলু, সবুজ শাক সবজি,বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকোলি, ওলকপি ও শালগম ,রঙ্গিন ফল ও সবজি যেমন-পেঁপে, কমলা, লেবু, জাম্বুরা, মিষ্টিকুমড়া, গাজর ও স্কোয়াশ, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, ফ্যাটি ফিশ এবং মাশরুম।
টিউমারের চিকিৎসা
বর্তমানে টিউমারের চিকিৎসা পদ্ধতি অনেক আধুনিক ও উন্নত হচ্ছে। প্রাথমিক পর্যায়ে টিউমার শনাক্ত করা গেলে খুব সহজেই এর থেকে আরোগ্য লাভ করা যায়।
সাধারণত বিনাইন টিউমার ওষুধ বা সর্বোচ্চ অপারেশনের মাধ্যমে সেরে যায়। এছাড়া হোমিওপ্যাথিক ওষুধ টিউমার দূর করতে অনেক কার্যকরী। যেমন- থুজা, কোনিয়াম, ব্যারাইটা কার্ব, ক্যালকেরিয়া কার্ব প্রভৃতি।
ম্যালিগন্যান্ট টিউমার প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা গেলে অল্প সময়ে এর চিকিৎসা করে সুস্থতা লাভ করা যায়। ম্যালিগন্যান্ট টিউমার বেশি ছড়িয়ে গেলে তা ভয়াবহ ক্যান্সারের আকার ধারণ করে।অনেক সময় টিউমারের ধরণ অনুযায়ী কোমোথেরাপি, রেডিয়েশনথেরাপি, হরমোনথেরাপি, ইমিউনোথেরাপি, স্টোম সেল ট্রান্সপ্লেন্ট ইত্যাদি উন্নতমানের চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।
পরিশেষ
টিউমার চেনার উপায় গুলোকে জেনে টিউমারকে আগে থেকে মোকাবিলা করতে হবে। বর্তমান বিশ্বে অনিয়ন্ত্রিত দূষণ ও অস্বাস্থ্যকর জীবন যাপনের কারণে অনেকেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এর মধ্যে একটি রোগ হলো টিউমার। অনেকেই জানেন না টিউমার কেন হয়। অনেকসময় আমাদের গাফিলতির কারণে টিউমার ক্যান্সারের রূপ নেয়। তাই সচেতনতা বাড়াতে জানতে হবে টিউমার কি, টিউমার চেনার উপায়, এটি কেন হয় এবংপ্রতিরোধ ব্যবস্থা সম্পর্কে।
আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url