পাইলস এর হোমিওপ্যাথিক ঔষধের নাম জেনে নিন

পাইলস এর হোমিওপ্যাথিক ঔষধের নাম বা অর্শ রোগের হোমিও চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করব।কারণ অনেকে অর্শ বা পাইলস রোগের কথা বলতে দ্বিধা বা লজ্জা বোধ করেন। সঠিক সময় এই রোগের সঠিক চিকিৎসা না করালে সারা জীবন ভুগতে হয়। ফলে শরীরে রক্তশূন্যতা বা মলদ্বারে সংক্রমণ হতে পারে।পরিণতি হিসেবে রেকটাম ক্যান্সার হতে পারে।

পাইলস বা অর্শ এমন একটি রোগ যাতে পৃথিবীর শতকরা ৮০ জনই এই রোগে ভোগেন। কিন্তু খুব কম মানুষই এর চিকিৎসা করান। সুতরাং খুব তরুণ অবস্থা থেকে এর চিকিৎসা করালে এর থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আর সেই চিকিৎসাটি হলো হোমিওপ্যাথিক ঔষধ দ্বারা চিকিৎসা। পাইলস এর হোমিওপ্যাথিক ঔষধের নাম এবং বিবরণ নিচে দেওয়া হলো।

আরম্ভ

পাইলস রোগটির সাথে আমরা সবাই পরিচিতি। মলদ্বারের ভেতরে বা বাইরে চারপাশে শিরাগুলো ফুলে মটরদানা কিংবা আঙ্গুরের মতো ছোট ছোট টিউমার হলে তাকে অর্শ বা পাইলস বলে।সূতরাংপাইলস এর হোমিওপ্যাথিক ঔষধের নাম ও আলোচনা হওয়ার দাবি রাখে।

মলত্যাগে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ, জন্মগত দুর্বল ধমনী, দীর্ঘ দিনের কোষ্ঠ কাঠিন্য, দীর্ঘ দিনের কাশি বা ভারী বস্তু উত্তোলন জনিত মলত্যাগের সময় বাথ্যাহীন রক্তপাত বা ব্যথাযুক্ত রক্তপাত, মলদ্বারে চুলকান, জ্বালাপোড়া বা মলদ্বার ফোলা বা বাহিরে বেরিয়ে আসা অনুভব করা ইত্যাদি হলো অর্শ বা পাইলস।

পাইলস এর হোমিওপ্যাথিক ঔষধের নাম

প্রধানত লিভারের মধ্যে এবং ধমনীতে রক্তাধিক্য হলে পাইলস হয়। এ ছাড়া অলস প্রকৃতির লোকের সারা দিন বসে বসে থাকা, ঘিয়ে ভাজা বা অধিক মসলা যুক্ত রান্না খাওয়া, অধিক কোথ দিয়ে পায়খানা করা। ঘন ঘন জোলাপের ওষুধ খাওয়া মলদ্বারের কৃমির অত্যচার এবং মা-বাবার এই রোগ থাকলে সন্তানেরও অর্শ হয়। অতএব,পাইলস এর হোমিওপ্যাথিক ঔষধের নাম সহ নিম্নে আলোচনা করা হলো।
  • ইসকিউলাস হিপ(Aesculus Hip)
পাইলসের রোগীর কোমরে অত্যন্ত ব্যথা,রক্তস্রাব তেমন একটা হয় না। যদিও হয় অনেকদিন পরে অল্প। মলদ্বারে খোঁচানি, টাটানি ব্যথা, মলদ্বার চুলকায্‌,জ্বলে ইত্যাদি লক্ষণে ইহা উপকারী। সকালে ও সন্ধ্যায় অল্প জলে Aesculus Hip Q, ১০ফোঁটা করে সেবন করুন।

  • হ্যামামেলিস(Hamamelis)
মলত্যাগের সময় খুব রক্তপাত হয় ও সঙ্গে খুব ব্যথা অনুভব হয় এবং অত্যান্ত টাটানি ব্যথায় ও ফুলায় হ্যামামেলিস উপকারী। তাহলে সকাল সন্ধ্যা Hamamelis Q, ১০ ফোঁটা করে সেবন করুন। তবে বাহ্যিক ব্যবহার করতে পারবেন।
  • কলিনসোনিয়া(Collinsonia)
মলের সাথে রক্ত, মলদ্বারে প্রচুর ব্যথা ও জ্বালা, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটে গ্যাস জমে ইত্যাদি লক্ষণে ইহা উপকারী। সকালে ও সন্ধ্যায় অল্প জলে দিয়ে Collinsonia Q সেবন করুনঅথবা 30 শক্তি দিনে তিন বার,200শক্তি দিনে দুই বার সেবন করুন।

  • এমোন কর্ব(Ammon Carb)
রক্ত স্রাবীয় পাইলস একটি চমৎকার ওষুধ।মল অতি কষ্টে নির্গত হয়, রক্ত পড়্‌ মাল দ্বার চুলকায় মলত্যাগের সময় অর্শ বলি বাহির হইয়া পড়ে, ব্যথা করে এক্ষেত্রে এমোন কর্ব উপকারী। 30 অথবা 23 শক্তি দিনে দুইবার সেবন করবেন।
  • এসিড নাইট(Acid Nit)
মলদ্বারে যেন কাঁটা ফোটানো আছে এরকম মনে হয়। খিটখিটে মেজাজ, প্রস্রাবে তীব্র গন্ধ,মলদ্বার অত্যন্ত জ্বালা। সকাল সন্ধ্যা ২/৩ ফোঁটা.200শক্তি খালি পেটে সেবন করুন।

  • সালফার(Sulphur)
নানা প্রকার অর্শ রোগে এই ওষুধ ব্যবহার হয়ে আসছে। ডাক্তার কালির মতে সালফার 1m বা 10m প্রাতে একমাত্র সেবনে অর্শ রোগ অব্যর্থ ফল হয়।
  • নাক্স ভমিকা(Nux Vomika)
যারা অতিরিক্ত চা কফি খান, সারাদিন বসিয়া থাকেন,কোনো কাজ বা পরিশ্রম করেন না। তাদের অর্শে সকাল সন্ধ্যায় ২/৩ ফোঁটা30শক্তি খালি পেটে সেবন করুন।
  • মিলিফোলিয়াম(Millefolium)
যন্ত্রণাবিহীন অর্শ রোগ গুহ্যদ্বার হইতে টকটকে লাল রক্ত স্রাবে ইহা অব্যর্থ।সকালে ও সন্ধ্যায় অল্প জলে দিয়ে Millefolium Q,সেবন করুনঅথবা 30 শক্তি দিনে তিন বার,200শক্তি দিনে দুই বার সেবন করুন।

পরিশেষ

পরিশেষে আমরা বলতে পারি যে,প্রাথমিক ভাবে অভিজ্ঞ চিকিৎসকগণ যেসব মেডিসিন নির্বাচন করে থাকে যেমন: এমন কার্ব,নাক্স ভোম, সালফার, ইসকিউলাস হিপ, কলিনসোনিয়া, এসিড নাইট ইত্যাদি সহ আরো অনেক ঔষুধ লক্ষণের উপর আসতে পারে । এইসব ঔষুধ গুলো বিশেষজ্ঞ হোমিও চিকিৎসক ছাড়া নিজে নিজে ব্যবহার করলে রোগ আরোও জঠিল আকারে পৌছতে পারে। অতএব, অভিজ্ঞ চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসা নিন, সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url