আঁচিল দূর করার হোমিও ঔষধ সম্পর্কে বস্তারিত জেনে নিন

আঁচিল দূর করার হোমিও ঔষধ অথবা আঁচিল দূর করার উপায় জানা দরকার। কারণ মানুষের জীবনে কোনো না কোনো সময় আঁচিল হয়ে থাকে। ব্যবস্থা না নিলে একবার আঁচিল হলে তা ছড়িয়ে যেতে পারে।প্রতিটি মানুষের উচিত আঁচিল নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা। এই পরিস্থিতিতে আঁচিলের সমস্যা সমাধানের জন্য সেবন করতে পারেন আঁচিল দূর করার হোমিও ঔষধ। এই চিকিৎসাতে সুস্থ থাকতে পারবেন।
মানুষের আঁচিলের সমস্যা থাকলেও খুব কম সংখ্যক মানুষ এই নিয়ে চিন্তিত। তাই সতর্কতার অভাবে এই রোগ ছড়াতে থাকে। সূতরাংআঁচিল দূর করার হোমিও ঔষধ সম্পর্কে জেনে নিন এবং আঁচিল থেকে মুক্তির উপায় অবলম্বন করুন।

আরম্ভ

আঁচিল(ওয়ার্টস) হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস বা এইচপিভি ভাইরাস সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে। অর্থাৎ এটি হল ভাইরাসজনিত রোগ। এবার আঁচিল(Warts)সারানো নিয়ে মানুষ নানা সময়ে বিভ্রান্ত হয়ে যান। কিন্তু হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় আঁচিল সহজেই সেরে যায়। সেক্ষেত্রে আঁচিল থেকে দূরে থাকতে চাইলে আপনি হোমিওপ্যাথিক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন এবংআঁচিল দূর করার হোমিও ঔষধ সেবন করুন।

আঁচিল দূর করার হোমিও ঔষধ

  • থুজা অক্সি (Thuja Occi)

রোগীর শরীরে আঁচিল(ওয়ার্টস)গুলো ফুল কপির মত ফাঁটা ফাঁটা শক্ত হলে থুজা এ ধরনের আঁচিলের জন্য অব্যর্থ ঔষধ।শক্তি 1m বা 10m বা 50m বা cm সকাল বিকাল দুই মাত্রা সেবন করবেন। Q বাহ্যিক প্রয়োগ করলে আঁচিল আরোগ্য হয়। মনে রাখবেন পেঁয়াজ খেলে পূজার ক্রিয়া নষ্ট হয়।
  • এসিড নাইট (Acid Nit)

মলদ্বারে, লিঙ্গ্‌ অন্ডকোষে, কুঁচকিতে,চোখের পাতায়, শরীরে বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় ফুলকপির মত আঁচিল,স্পর্শে রক্ত ঝরে, গুপ্ত স্থানে আঁচিল দুর্গন্ধ রস ঝরে। রক্তস্রাবী আঁচিলে থুজা অব্যর্থ ওষুধ। আঁচিল থেকে দুর্গন্ধ রস ঝরে। এমন লক্ষণে আঁচিল দূর করার হোমিও ঔষধ এর মধ্যে এসিড নাইট বা নাইট্রিক এসিড উত্তম কার্যকারী।শক্তি Cm সকাল বিকাল দুই ফোঁটা করে দুই দিন সেবন করবেন।


  • কষ্টিকাম (Causticum)

নাকে, মুখে, বুকে বা শরীরের বিভিন্ন স্থানে নিরেট মসৃণ আঁচিল(ওয়ার্টস) কিংবা কলমের আগার মতো সূচালো আঁচিলে কষ্টিকাম অব্যর্থ।এই রোগীর মনটা বড় কোমল, মা্নসিক ভীতিপূর্ণ। শক্তি 200 বা 1m সকাল বিকাল দুই মাত্র, পুরাতন রোগে আরও উচ্চশক্তি প্রয়োগ করুন।
  • লাইকোপেডিয়াম (Lycopodium)
শরীরের ডান দিকে আঁচিল, দাঁড়ি বা গোঁফে খাড়া খাড়া আঁচিল(ওয়ার্টস), রোগী প্রায় পেটের রোগে ভােগে, গরম খাবার প্রিয়। ভাজা পােড়া ও লবণাক্ত খাবার বেশি পছন্দ কর। এই লক্ষণে লাইকোপোডিয়াম উচ্চশক্তি ব্যবহার করতে পারেন।
  • ক্যালকেরিয়া কার্ব(Calcarea Carb)
মোটা থলথলে মেদ পূর্ণ রোগীদের শরীরে বিভিন্ন স্থানের আঁচিলে এই ওষুধ উপকারী। শক্তি 30 বা 200 সকাল বিকাল দুই মাত্রা,পুরাতন রোগে 1m বা আরো উচ্চশক্তি প্রয়োগ করুন।
  • এন্টিম ক্রূড(Antim Crud)
পদ্ম কাঁটার মত শরীরের ভাজে ভাজে ঘামাচির মত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আঁচিল। পদ্ম কাঁটার মত সুচালাে ব্যথাহীন, কিন্তু চুলকানি যুক্ত। অম্ল খাওয়ার প্রবনতা বেশি। প্রায় পেটে পীড়ায় ভােগে। মেজাজ উগ্র ঠান্ডা অসহ্য। আঁচিলের ভেতর ভাতের মত , আঁচিল বিশেষ করে মুখে ও পেটে হয়। এক্ষেত্রে এন্টিম ক্রূড ব্যবহার করতে পারেন।
  • সালফার (Sulphur)
অনেক দিনের পুরাতন আঁচিলে সালফার অত্যন্ত কার্যকারী ঔষধ। শক্তি 1m ব্যবহার করুন,দ্রুত ফল পাবেন।
  • হিপার সালফ (Hepar Sulph)
আঁচিল দূর করার হোমিও ঔষধ এর মধ্যে হিপার সালফ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ। অতএব ব্যথাযুক্ত আঁচিলে হিপার সালফ উচ্চশক্তি ব্যবহার করুন উপকৃত হবেন।
  • নেট্রাম মিউর(Natrum Mur)
হাতে, পায়ে, মলদ্বারে, লিঙ্গে, শরীরে বিভিন্ন স্থানে আঁচিলে নেট্রাম মিউর ঔষুধ উত্তম কার্যকারী।
  • নেট্রাম সালফ (Natrum Sulph)
নেট্রাম সালফ এবংনেট্রাম মিউর ঔষধ দুইটি পর্যায়ক্রমে ব্যবহারে আঁচিল আরোগ্য হয়। উচ্চশক্তি দুই থেকে তিন মাত্রা ব্যবহার করুন।
  • সাইলেসিয়া(Silicea)
ছেলে মেয়েদের মুখে, বুকে, পেটে, একপ্রকার ছোট বড় মসৃণ আঁচিল মাঝে মাঝে পাকে পুজ পড়ে। আঁচিলের স্থানটি শক্ত হইয়া থাকে, ইহাতে সাইলেসিয়া উপকারী।শক্তি200 বা 1m বা আরো উচ্চশক্তি ফলদায়ক।

আঁচিল দূর করার উপায়

  • থুজা (Thuja Occi), নাইট্রিক এসিড (Nitric Acid), কষ্টিকাম (Causticum) যেকোন আঁচিলে এই তিনটি ঔষধ উচ্চশক্তি পর্যায়ক্রমে সেবন করলে যেকোন আঁচিল দূর হয়। ঔষধ গুলো ৭দিন বা ১০ দিন বা ১৫ দিন পর পর সেবন করবেন।
  • থুজা (Thuja Occi) Q মাদার বাহ্যিক প্রয়োগ করতে ভুলবেন না, লক্ষণ অনুযায়ী আপনি যে কোন ঔষধ সেবন করতে পারেন।
  • উচ্চ শক্তি 1m থেকে শুরু করতে হবে, নিন্মশক্তি তেমন ফলদায়ক না। এছাড়াও একজন অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে শক্তি মাত্রা অনুযায়ী ওষুধ সেবন করবেন।
আরো পড়ুনঃ  ডায়াবেটিস হলে কি কি সমস্যা হয় | ডায়াবেটিস রোগীর খাদ্য তালিকা

পরিশেষ

পরিশেষে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারে যে, যে ঔষধের লক্ষণের সাথে আপনার লক্ষণ মিলে যায় সে ওষুধটি সেবন করতে পারবেন।ঔষধ সেবনের জন্য একজন অভিজ্ঞ ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। কারণ ঔষধের শক্তি মাত্রা প্রয়োগ একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।যা না জেনে সেবন করা উচিত হবে না। আপনার সুস্বাস্থ্য আমাদের একমাত্র কাম্য।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url