মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয়
মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয়, এটি জানা প্রত্যেক মেয়েরই প্রয়োজন। সাথে সাথে জানা দরকার মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে করণীয় কি?প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া মূত্রনালীর সংক্রমণের একটি সাধারণ লক্ষণ। ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে মূত্রনালী সংক্রমণ হতে পারে। মূত্রনালীর প্রদাহের কারণেও মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হতে পারে।
প্রস্রাব কিডনি থেকে মূত্রাশয়ের মাধ্যমে মূত্রনালীতে পরিবাহিত হয়। অঙ্গগুলোর যেকোনো একটিতে প্রদাহ হলে প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা ব্যথা হতে পারে। আমরা মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয় তা জানাবো, পড়তে থাকুন।
আরম্ভ
মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয়,আসলে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে এই সমস্যা হয়। সমস্যাটি বিশেষ করে মূত্রাশয় এবং মূত্রনালী ইনফেকশন জনিত কারণে হতে পারে। এছাড়া যারা কম পানি পান করেন তাদেরও সমস্যা হতে পারে। তবে পুরুষের তুলনায় মেয়েদের এই সমস্যা বেশি হয়।তাই মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে করণীয় কি এটিও জানা প্রয়োজন।
মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয়
মূত্রনালীর সংক্রমণ
ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে মূত্রনালীর সংক্রমণ হতে পারে। মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয়, মূত্রনালীর প্রদাহ তার অন্যতম কারণ।প্রস্রাব কিডনি থেকে মূত্রাশয়ের মাধ্যমে মূত্রনালীতে প্রবাহিত হয়। এই অঙ্গগুলোর যেকোনো একটি প্রদাহের কারণে প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হয়।
ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে মূত্রনালীর সংক্রমণ হতে পারে। মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয়, মূত্রনালীর প্রদাহ তার অন্যতম কারণ।প্রস্রাব কিডনি থেকে মূত্রাশয়ের মাধ্যমে মূত্রনালীতে প্রবাহিত হয়। এই অঙ্গগুলোর যেকোনো একটি প্রদাহের কারণে প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হয়।
মেয়েদের যোনিপথ থাকায় তাদের মূত্রনালী ছোট। মূত্রনালী ছোট হওয়ার কারণে ব্যাকটেরিয়াকে মূত্রাশয়ে এবংমূত্রনালী সংক্রমণের জন্য অল্প দূরত্ব অতিক্রম করতে হয়। এছাড়া মূত্রনালীর সংক্রমণ গর্ভবতী মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখা যায়৷
যৌনবাহিত সংক্রমণ
মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয়, যৌন সংক্রমণ থাকলে প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া বা ব্যথা হতে পারে। মেয়েদের যৌনাঙ্গে গনোরিয়া এবং সিফিলিসের মত রোগে আক্রান্ত হলে মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হয়।
মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয়, যৌন সংক্রমণ থাকলে প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া বা ব্যথা হতে পারে। মেয়েদের যৌনাঙ্গে গনোরিয়া এবং সিফিলিসের মত রোগে আক্রান্ত হলে মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হয়।
মূত্রনালী প্রদাহ
ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালীতে প্রবেশ করলে মূত্রনালীর সংক্রমণ হয়। যখন সংক্রমণ মূত্রাশয়ে ছড়িয়ে পড়ে তখন তাকে বলা হয় সিস্টাইটিস।যখন এটি মূত্রনালীতে ছড়িয়ে পড়ে তখন তাকে ইউরেথ্রাইটিস বলে। ইউরেথ্রাইটিস এমন একটি অবস্থা যেখানে মূত্রনালীতে প্রদাহ হয়, এটি সাধারণত ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের ফলে। ইউরেথ্রাইটিস প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া বা প্রস্রাবের ইচ্ছা বৃদ্ধি করে।
শ্রোণীর প্রদাহ (পেলভিসের প্রদাহ)
শ্রোণীর প্রদাহ রোগ বা পি আই ডি (পেলভিক ইনফ্লেমেটরি ডিজিজ)সাধারণত ফ্যালোপিয়ান টিউব, , ডিম্বাশয়,ডিম্বনালি, সার্ভিক্স ও জরায়ু এবং অন্যান্য প্রজনন অংগের সংক্রামণকে বলা হয়।পেলভিসের প্রদাহ একটি বিপজ্জনক অবস্থা যা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে ঘটে। সুতরাং মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয় তা আর বুঝতে বাকি থাকে না।
মূত্রাশয়ের আস্তরণের প্রদাহ (সিস্টাইটিস)
মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয় তার আরেকটি কারণ হল সিস্টাইটিস বা মূত্রাশয়ের আস্তরণের প্রদাহ। ইন্টারস্টিশিয়াল সিস্টাইটিস বেদনাদায়ক মূত্রাশয় সিন্ড্রোম নামে পরিচিত। এই ধরনের সিস্টাইটিসের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়াসহ মূত্রাশয় এবং শ্রোণী অঞ্চলে ব্যথা।
প্রস্রাব নিঃসরণে বাধা(অবস্ট্রাকটিভ ইউরোপ্যাথি)
অবস্ট্রাকটিভ ইউরোপ্যাথি হল যখন আপনার প্রস্রাব কোন প্রকার বাধার কারণে আপনার মূত্রনালী, মূত্রাশয় বা মূত্রনালী দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে না বা হয় আংশিক।কিডনি থেকে মূত্রাশয় প্রবাহিত হওয়ার পরিবর্তে প্রস্রাব কিডনির দিকে প্রবাহিত হয়।যখন ইউরেটার, মূত্রাশয় বা মূত্রনালী বাধাগ্রস্ত হয়, তখন প্রস্রাব কিডনিতে প্রবাহিত হয়, যার ফলে অবস্ট্রাকটিভ ইউরোপ্যাথি হয়।
মূত্রনালীর সংকোচন
মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয় তার আরেকটি সমস্যা হলো ইউরেথ্রাল স্ট্রিকচার, মূত্রনালীতে সংকোচন, যার ফলে তুলনামূলক প্রস্রাব হয় না এবং প্রস্রাবের রাস্তা জ্বালাপোড়া করে।
কিডনিতে পাথর
মানবদেহের উপাদান ও খনিজ দিয়ে আমাদের শরীরের কয়েকটি অঙ্গে পাথর তৈরি হতে পারে,তার মধ্যে কিডনি অন্যতম। কিডনি ও মূত্রথলির পাথর আমাদের দেশে প্রায়ই দেখা যায়। কিডনিতে পাথর থাকলে আরামে প্রস্রাব করা কঠিন হয় যার ফলে প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হয়।
মেডিকেশন(পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া)
মেডিকেশন ঔষধ বলতে ঐ সকল দ্রব্যকে বুঝায় যা মানুষ বা প্রাণীর বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ের, প্রতিকারের, উপশমের অথবা প্রতিরোধের জন্য আভ্যন্তরীক বা বাহ্যিকভাবে ব্যবহৃত হয়।পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসাবে, ক্যান্সারের চিকিৎসা এবং অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া মূল কারণ।
মাসিক (পিরিয়ড)
মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া কেন হয় তার আরেকটি কারণ হচ্ছে মাসিক বা পিরিয়ড। প্রতি মাসেই মেয়েদের মাসিক হয়। সকলেই ন্যাপকিন কিংবা কাপড় ব্যবহার করে। সেই ন্যাপকিন বা কাপড়ের সাথে জীবাণু বা ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালিতে প্রবেশ করে এবং সংক্রমণের সৃষ্টি করে।আবার সঙ্গীর সাথে যৌন মিলনে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হতে পারে।
পর্যাপ্ত পরিমান পানি পান না করা
প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হওয়ার মূল কারণ হলো পর্যাপ্ত পরিমানে পানি না করা। পানি আমাদের দেহের বেশীর ভাগ রোগ নিরাময় করতে সাহায্য করে। অপর্যাপ্ত পানি দেহের নানাবিধ রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পর্যাপ্ত পানির অভাবে প্রস্রাবে জ্বলাপোড়া হয়। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া সাধারণত তাদের মাঝেই দেখা দেয় যারা দেহের প্রয়োজন অনুযায়ী পানি পান করে না।
অন্যান্য কারণ
মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া সবসময় সংক্রমণের কারণে হয় না। আপনি আপনার যৌনাঙ্গে যে জিনিসগুলি ব্যবহার করেন তার দ্বারাও জ্বালাপোড়া হতে পারে। সাবান, লোশন, বুদ্বুদ স্নান, বিশেষ করে যোনি টিস্যুতেও জ্বালাতন করতে পারে।
মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হলে করণীয়
- লেবুপানি পান করুন লেবুর রস মিশ্রিত পানি পান করা শরীরের জন্য ভালো।
- প্রচুর পানি পান করুন, পানি তো প্রতিদিন পান করেন।
- শসার জুস খাওয়া প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া কমানোর আরেকটি কার্যকরী উপায় হতে পারে ।
- ডাবের পানি পান করুন ডাবের পানি নানাভাবে আমাদের শরীরের উপকার করে থাকে।
- মেয়েদের প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া হওয়ার জন্য ক্যান্থারিস নামক হোমিও ওষুধটি ২০০ শক্তির ২-৪ ফোটা সেবন করতে পারেন, তাৎক্ষণিক উপশম পাবেন। এলোপ্যাথিক ওষুধ অ্যান্টিবায়োটিক ফেমিসেফ৫০০mg,১৪ দিন সেবন করতে পারেন, অবশ্যই উপকৃত হবেন।
পরিশেষ
যোনিপথে বা প্রস্রাবের রাস্তায় ছত্রাক অথবা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হতে পারে। এ ছাড়া তলপেটে ব্যথা, মাসিক ব্যথা, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, সাবান বা কসমেটিকস বা প্যাডে অ্যালার্জিসহ বিভিন্ন কারণে প্রস্রাবে সংক্রমণ হতে পারে। বারবার সংক্রমণ হলে ডায়াবেটিস, কিডনি সমস্যা অথবা মূত্রথলিতে কোনো সমস্যা আছে কিনা দেখে নিন।
আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url