মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় গুলো জেনে নিন

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় না জানলেই নয়,কারণ অতিরিক্ত ওজন মানে বাড়িতে ঝামেলা। শারীরিকভাবে ফিট মেয়েদের তুলনায় অতিরিক্ত ওজনের মেয়েদের অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি থাকে ৬৬ শতাংশ। অতিরিক্ত ওজনের কারণে মেয়েদের শারীরিক, মানসিক ও হরমোনজনিত নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

মহিলাদের ওজন কমানোর ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম মানতে হবে। ওজন কমানোর চেষ্টা করার আগে নিশ্চিতভাবে হরমোনের মাত্রা পরীক্ষা করা উচিত। কারণ হরমোনের বিভিন্ন সমস্যা ওজন বাড়াতে পারে।মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় খুঁজে বের করতে পারেন না। তবে আমাদের কিছু পরামর্শ মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর জন্য সহায়তা করবে আশা করি।

আরম্ভ

মেয়েদের ওজন কমানোর কয়েকটি উপায়ের মধ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট পরিমাণে ঘুমানো, পরিমিত খাওয়া-দাওয়া করা, হাশিখুশি থাকা, শরীরের যত্ন নেওয়া এবং ব্যায়াম করা। সূতরাং মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় জেনে ওজন কমিয়ে ফেলতে পারেন। নিম্নে আপনার দ্রুত ওজন কমানোর জন্য কিছু সহজ উপায় দেওয়া হলো:

মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায়

  • খাওয়ার আগে পানি পান করুন

খাওয়ার আগে পানি পান করলে অতিরক্ত খাবার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকা যায়। যারা খাবার আগে জল পান করেন তাদের ওজন ৪৪ শতাংশ কমে যায়। মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায়গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে খাওয়ার আগে পানি পান করা। প্রতিদিন ৫-৬ লিটার পানি পান করার চেষ্টা করুন। এতে হজম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়,ত্বক সুন্দর থাকে এবং শরীরের ওজন কমাতে সহায়তা করে।
  • পর্যাপ্ত পানি পান করুন
পরিমাণ মতো এক ঘণ্টা অন্তর অন্তর পানি পান করুন। পানি আপনার শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বের করে আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া পানি আমাদের ত্বক ও স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পর্যাপ্ত পানি রাখুন এবং নিয়ম মেনে তা পান করুন।
  • খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করুন
মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় হলো প্রথমেই আপনাকে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনতে হবে। আপনার খাদ্যাভ্যাস যেন নিয়ম মেনে প্রতিদিন একই সময়ে হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখুন। সকালে হালকা নাশতা, দুপুরে ভাত আর রাতে রুটি বা হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। এই খাদ্যাভ্যাস আপনাকে ওজন কমাতে সাহায্য করবে।
  • সুষম খাবার গ্রহণ করুন
ওজন কমানোর অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে আপনাকে সুষম খাবার খেতে হবে। বেশি পরিমাণে ফলমূল, শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন।চর্বি বা চর্বিজাতীয় খাবার সম্পূর্ণরূপে বাদ দিন। বাইরের তেলে ভাজা খাবার খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। ফাস্ট ফুড কম খাওয়ার চেষ্টা করুন।
  • কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার কম বা না খাওয়া
অতিরিক্ত ওজন থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চাইলে অবশ্যই কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে। এই সব খাবারের মধ্যে রয়েছে পাউরুটি, সফট ড্রিংকস, আলু,চিনি প্রভৃতি। এই খাবার গুলো শরীরে অনেকটা মেদ বাড়িয়ে দেয়। তাই এই খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে ফেলতে হবে।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন
মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় গুলোর মধ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিয়মিত ব্যায়াম করা। নিয়মিত ব্যায়াম করার মাধ্যমে মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানো সম্ভব। প্রতিদিন সকালে উঠে হাঁটাহাঁটি করা একটা ভালো ব্যায়াম। এছাড়াও আপনি সাঁতার কাটতে পারেন, কার্ডিও ব্যায়াম যেমন- ডাম্বেল,সাইকেলিং,স্কোয়াশ, এবং ওয়াকিং ব্যায়াম নিয়মিত ভাবে করুন।
  • ব্ল্যাক কফি পান করুন
ক্লোরোজেনিক অ্যাসিড ওজন কমাতে সাহায্য করে। এই অ্যাসিড শরীরে গ্লকোজ এবং ফ্যাট সেল গঠন পিছিয়ে দেয়। ক্যাফেইন কার্যকরীভাবে খিদে কমাতে সাহায্য করে।মেয়েরা চিনিযুক্ত কফি পরিহার করে ব্ল্যাক কফি পান করতে পারেন।
  • গ্রিন টি পান করুন
মেয়েদের অতিরিক্ত ওজন কমাতে ব্ল্যাক কফির মতো গ্রিন টি যথেষ্ট সহায়ক ভূমিকা পালন করে। গ্রিন টিতে শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রচুর পরিমাণে থাকে, এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো শরীর থেকে চর্বি কমিয়ে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রিন টি প্রতিদিন চার কাপ করে এক সপ্তাহ খেলে শরীর থেকে ৪০০ গ্রাম ক্যালরি ক্ষয় করা সম্ভব। ফলে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় গ্রিন টি রাখুন।
  • লেবু্র রসযুক্ত পানি পান করুন
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে হালকা গরম পানিতে শুধু লেবুর রস মিশিয়ে খেতে পারেন। সকালে এই কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে চর্বি কমে গিয়ে আপনাকে স্লিম বানাতে সহায়তা করবে। সূতরাং লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায় একটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ মাধ্যম।
  • ফল ও শাক-সবজি খান
গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি বেশি ফলমূল ও শাকসবজি খেলে ওজন কমে। কারণ, ফলমূল ও শাকসবজিতে রয়েছে ফাইবার, ভিটামিন ও খনিজের মতো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। যা মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় হিসেবে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
  • আঁশযুক্ত বা ফাইবার খাবার খান
অতিরিক্ত ওজন কমাতে চাইলে আঁশযুক্ত বা ফাইবার খাবার বেশি বেশি খেতে হবে। কারণ, এসব খাবার পানি ও তেল শোষণ করে আমাদের হজম প্রক্রিয়া সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সহায়তা করে। এতে অতিরিক্ত ওজন হওয়ার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

আঁশযুক্ত বা ফাইবার মহিলাদের ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে। ফাইবার খাওয়ার কারণে দীর্ঘ সময় পেট ভরা থাকে এবং অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার জন্যও ফাইবার খাওয়া স্বাস্থ্যকর। এগুলো ক্যান্সার এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। আপেল, মটরশুঁটি, মিষ্টি আলু, পালং শাক, ইত্যাদি ফাইবারের চমৎকার উৎস।
  • রোজা অথবা উপবাস থাকুন
রোজা হলো একটি না খাওয়ার প্রক্রিয়া, যেখানে খাওয়ার একটি চক্র অনুশীলন করতে হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বিরতিহীন রোজা রাখার চেষ্টা করেছেন, তারা ওজন কমাতে সফল হয়েছেন। তাই অতিরিক্ত ওজন কমাতে চাইলে রোজা রাখতে পারেন। এ সময় স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিকল্পনা করতে হবে এবং অতিরিক্ত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
  • পরিমিত ঘুম করুন
নির্দিষ্ট সময় স্থির করে কমপক্ষে ছয় থেকে আট ঘণ্টা পর্যাপ্ত ঘুম ওজন কমাতে সাহায্য করে। ঘুমের অভাব বিপাক ক্রিয়া কমিয়ে দেয় এবং শরীরে জল ধরে রাখে।
  • চিনি পরিহার করুন
ওজন কমানোর জন্য খাদ্য তালিকা থেকে চিনি পুরোপুরি পরিহার করুন। কারণ,মাত্র ১ চা-চামচ চিনিতে ১৬ শতাংশ ক্যালরি থাকে, যা আপনার ওজন কমানোর সম্পূর্ণ অন্তরায়। তাই চা ও দুধে চিনি পরিহার করুন।এটি মেয়েদের ওজন কমানোর টিপসের মধ্যে অন্যতম অপরিহার্য বিষয় । চিনির ব্যবহার কমালে দশ সপ্তাহের মধ্যে একজন ২পাউন্ড ওজন কমাতে পারে।
  • দুশ্চিন্তা পরিহার করুন
অবাক হতে পারেন, অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার ফলে মানুষ বেশি খায়। ফলে মোটা হওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। তাই নিজেকে ফিট রাখতে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা সম্পূর্ণভাবে পরিহার করুন।
  • পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন
দিনে কমপক্ষে ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। তবে এর বেশি ঘুমালে আপনার ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। দিনের বেলা ঘুমানোর অভ্যাস পরিহার করুন। মনে রাখবেন, অতিরিক্ত ঘুম আপনার শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই নিয়ম মেনে রাতে জলদি ঘুমাতে যান ও ভোরবেলা উঠে পড়ুন।
  • রাতের খাবার দ্রুত খেয়ে নিন
ঘুমাতে যাওয়ার কমপক্ষে এক থেকে দেড় ঘণ্টা আগে রাতের খাবার শেষ করুন। চেষ্টা করুন আটটার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নিতে। কারণ, রাতে খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যদি শুয়ে পড়েন, তাহলে আপনার ওজন দ্রুত বেড়ে যাবে। রাতে ঘুমানোর আগে খিদে লাগলে ফলের জুস অথবা দুধ খেতে পারেন।
  • অতিরিক্ত খাবার পরিহার করুন
আপনার জন্য যেটুকু খাবার প্রয়োজন, ঠিক ওই পরিমাণে খাবার খান। নিজের শরীরের চাহিদার তুলনায় অতিরিক্ত খাবার খেলে আপনার ওজন বাড়বেই। তাই এক মাসে সাত কেজি বা তার বেশি ওজন কমাতে চাইলে অতিরিক্ত খাবার সম্পূর্ণভাবে পরিহার করুন।
  • খাদ্য তালিকায় সালাদ রাখুন
খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন রঙের সবজি বা ফল দিয়ে তৈরি সালাদ রাখুন। এই সালাদের সঙ্গে টক দই মেশাতে পারেন। এতে উপকার পাবেন।
  • খাবারের আসক্তি কাটাতে অল্প পরিমাণে খান
ছোট ছোট ভাগে খাবার ভাগ করে নিলে মেয়েদের বাজে খাবার খাওয়া কম হয় এবং তাদের পেটও ভর্তি থাকে। এতে দ্রুত ওজন কমানো সহজ হয়।
  • ছোট প্লেট ব্যবহার করুন
ছোট প্লেটে খাবারের পরিমাণ বেশি দেখায় যার ফলে মানসিক ভাবে পর্যাপ্ত খাদ্য গ্রহণের তৃপ্তি বোধ করা যায়। যা মেয়েদের দ্রুত ওজন কমানোর উপায় হিসেবে কাজ করে।
  • খাবার ধীরে ধীরে চিবিয়ে খান
খাবার ধীরে ধীরে চেবানোর ফলে খাবারের প্রতিটি টুকরো পর্যাপ্তভাবে ভাঙে এবং সহজে হজম হয়।

লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায়

লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায় গুলো পালন করে আপনার ওজন কমানোর চেষ্টা করুন-
  • আমরা ওজন কমাতে কত কিছুই না করি। তবে সবচেয়ে প্রচলিত কথা হচ্ছে লেবু পানি খেয়ে ওজন কমানো। লেবু পানি গরম ও ঠান্ডা আপনি খেতে পারেন। এই পানিতে হজম শক্তি বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শক্তির মাত্রা বৃদ্ধিসহ নানা স্বাস্থ্য উপকারিতা আছে।
  • আপনি যদি লেবু পানি নিয়মিত খেতে পারেন, সেক্ষেত্রে ওজন কমাতে পারবেন। লেবুর সাথে বেশি পানি পান করলে ওজন কমানো সহজ হয়। মূলত লেবুর মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। এই ভিটামিন শরীর থেকে ক্ষতিকর পদার্থ বের করে দেয়।
  • লেবু পানি আপনাকে হাইড্রেটেড রাখতে পারে। কোষে পুষ্টি বহন করা, শরীর থেকে বর্জ্য পরিবহন করা এবং হাইড্রেটেড থাকার জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা স্বাস্থ্যের জন্যে খুবই জরুরী। লেবু পানি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে শারীরিক কর্মক্ষমতা উন্নত করা পর্যন্ত সবকিছুতেই পর্যাপ্ত হাইড্রেশন বজায় রাখে।
  • লেবু পানি পান করলে মেটাবোলিজম বাড়তে পারে। গবেষকরা পরামর্শ দেন যে, ভাল হাইড্রেশন মাইটোকন্ড্রিয়ার কার্যকারিতা বাড়ায়।ইহা হজম বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, যা পরবর্তীতে ওজন হ্রাস করে।
  • খাদ্যাভ্যাস ঠিক না করে ও শরীরচর্চা না করে শুধু লেবুপানি পানে ওজন কমে না। লেবুপানি পান করে শরীরচর্চা করলে ক্যালরি ক্ষয়ের পরিমাণ বাড়ে। এটি দ্রুত ওজন কমানোর ক্ষেত্রে সহায়ক হিসেবে কাজ করে।
লেবু দিয়ে ওজন কমানোর উপায় জানুন এবং উপরিউক্ত নিয়মগুলো মেনে আপনার ওজন কমাতে পারেন।

কফি দিয়ে ওজন কমানোর উপায়

কফি দিয়ে ওজন কমানোর উপায়গুলো পালন করে আপনার ওজন কমানোর চেষ্টা করুন-

  • বাড়তি ওজন রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে, নিয়ম করে শরীরচর্চা করছেন, খাওয়া নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন, তবুও দ্রুত ওজন কমানোর জন্য কত কিছুই-না করি আমরা। তবে কফি খেলে ওজন কমানো সম্ভব।অলসতা কাটাতে এবং শরীর সতেজ রাখতে বেশ সাহায্য করে কফি। তবে ওজন কমানোর জন্য প্রতিদিন ডায়েটে রাখতে হবে বিশেষ কফি।
  • ডার্ক চকলেটে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আর প্রচুর পরিমাণে মোনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। এই দুই পদার্থ কফির সাথে মিশলে বিপাক ক্রিয়ার হার বাড়ে। এই কফি খেলে অনেকক্ষণ পেট ভরা থাকে, খিদের অনু‌ভূতি কমায়। সব মিলিয়ে ওজন কমার প্রক্রিয়া গতি পায়। সকালে এই কফি দিয়ে দিনটা শুরু করলে ওজন কমানোর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হবে।
  • দারুচিনিতে ভরপুর মাত্রায় অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। ক্যাফিনের সাথে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট মিশলে ওজন কমার প্রক্রিয়া আরও দ্রুত হয় এবং হজম শক্তিও বাড়ে। তাই প্রতিদিন কফিতেই এক চিমটে দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে দেখতে পারেন। কফি দিয়ে ওজন কমানোর উপায় হিসেবে এটিও কার্যকারী পদক্ষেপ।
  • যারা কিটো ডায়েট করেন, পুষ্টিবিদরা তাদের খাদ্যতালিকায় এই কফি রাখেন। এক কাপ গরম জলে মিশিয়ে নিন এক টেবিল চামচ কফি। তবে কড়া কফি খেতে পছন্দ করলে পরিমাণ নিজের স্বাদমতো বাড়িয়ে নিতে পারেন। এরপর সেই কফিতে মিশিয়ে দিন এক চা-চামচ ঘি, মাখন ও নারকেল তেল। ভালো করে নাড়িয়ে নিন কফি। পরিবেশন করুন একেবারে গরম গরম।
  • দিনের শুরুতেএই কফি খেলে পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকবে, বিপাক হার বাড়বে। ফলে তাড়াতাড়ি ওজন কমবে ।তবে কেবল কফি খেলেই যে ওজন কমে যাবে, এমনটা নয়। তার পাশাপাশি শরীরচর্চাও করতে হবে।
কফি দিয়ে ওজন কমানোর উপায়গুলো জানুন এবং উপরিউক্ত নিয়মগুলো মেনে আপনার ওজন কমাতে পারেন।

এক সপ্তাহে ওজন কমানোর উপায়

এক সপ্তাহে ওজন কমানোর উপায় জানুন, কারণ ভুল ডায়েটের কারণে আরও বেশি ক্ষতি হতে পারে। ওজন কমানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হল ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন কমানো। বিভিন্ন ধরনের ডায়েট প্লান আছে যার মাধ্যমে আপনি ধীরে ধীরে স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন কমাতে পারবেন।তবে কোনো ডায়েট চার্টই পুষ্টিবিদকে না দেখিয়ে গ্রহণ করা উচিত নয়-

  • সপ্তাহের ১ম দিন
ডায়েটের প্রথম দিন শুধুমাত্র সতেজ ফল খেতে হবে। অন্যকোনো খাবার গ্রহণ করা যাবেনা। তবে সবক্ষেত্রেই অনেক পানি পান করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি সারাদিন যেকোনো ফল গ্রহণ করতে পারেন তবে আপনাদের সুবিধার জন্য একটি তালিকা দেয়া হলো-
  • সকালের নাস্তা: ১টি আপেল এবং লেবুরসসহ ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • সকাল-দুপুরের মাঝে: ১ বাটি কাঁচা পেঁপে এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • দুপুরের খাবার: ১ বাটি তরমুজ বা ২টি মাল্টা এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • বিকালের খাবার: ১টি কমলা বা টক ফল বা মিষ্টি লেবু সাথে পানি পান করুন।
  • সন্ধ্যার খাবার: ১ গ্লাস নারিকেল পানি পান করুন।
  • রাতের খাবার: ১ বাটি তরমুজ এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • সপ্তাহের ২য় দিন
এক সপ্তাহে ওজন কমানোর উপায় এর চ্যালেঞ্জ হিসেবে ডায়েটের ২য় দিন শুধু সবজি খেতে হবে। সেক্ষেত্রে ২য় দিন সবজি ছাড়া কিছুই খাওয়া যাবে না।
  • সকালের নাস্তা: ১ কাপ সিদ্ধ আলু এবং লেবুরসসহ ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • সকাল-দুপুরের মাঝে: ১ বাটি বাঁধা কপি বা লাল লেটুস এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • দুপুরের খাবার: ১টি শশা , ১টি টমেটো, আধা সিদ্ধ পেঁপে এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • বিকালের খাবার: ২টি টমেটো, ১ কাপ চেরি, ফুলকপি আধা কাপ সিদ্ধ এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • রাতের খাবার: লবণ ও মসলা দিয়ে সিদ্ধ ব্রকলি বা ফুলকপি এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • সপ্তাহের৩য় দিন
এক সপ্তাহে ওজন কমানোর উপায় এর চ্যালেঞ্জ হিসেবে ডায়েটের তৃতীয় দিনে এসে আপনি ফল ও সবজি একসঙ্গে খেতে পারবেন। তবে কলা খাওয়া যাবে না।
  • সকালের নাস্তা: ১টি আপেল, ১ কাপ তরমুজ এবং লেবুরসসহ ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • সকাল-দুপুরের মাঝে: ১ বাটি বরবটি পেঁপের সাথে মিশিয়ে সিদ্ধ করে এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • দুপুরের খাবার: শশা, লেটুস, টমেটো আধা সিদ্ধ ১ বাটি করে এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • বিকালের খাবার: ১টি কমলা বা পাকা আম এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • রাতের খাবার:সিদ্ধ ফুলকপি, তাজা সবুজ শাক-সবজি, কাঁচা পেঁপে ১ বাটি এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • সপ্তাহের ৪র্থ দিন
তিনদিন ধরে শুধু ফল আর সবজি খেয়ে থাকতে কিছুটা কষ্ট হয়েছে নিশ্চয়ই। আজ তাই বাড়তি কিছু খাওয়ার অনুমতি দেয়া হলো-
  • সকালের নাস্তা: গরম দুধ ১ গ্লাস, ২টি কলা এবং লেবুরসসহ ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • সকাল-দুপুরের মাঝে: কলা ও দুধের মিশ্রণ এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • দুপুরের খাবার: ১ বাটি সবজি স্যুপ এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • বিকালের খাবার: ১টি কলা এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • রাতের খাবার: ১ বাটি সবজি স্যুপ, কলা ও দুধের মিশ্রণ এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।

  • সপ্তাহের ৫ম দিন
পঞ্চম দিনে আপনি গরুর মাংস ও টমেটো একসঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারবেন। এটি আপনার শরীরের প্রোটিনের চাহিদা মেটাবে।
  • সকালের নাস্তা: অল্প আঁচে রান্না করা গরুর মাংস এবং স্যুপ এবং লেবুরসসহ ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • সকাল-দুপুরের মাঝে: মাংস ও টমেটো দিয়ে তৈরি খাবার, কম তেলে একটু মশলা দিয়ে রান্না করে নিতে পারেন এবং লেবুরসসহ ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • দুপুরের খাবার: মাংস ও টমেটো দিয়ে তৈরি খাবার, কম তেলে একটু মশলা দিয়ে রান্না করে নিতে পারেন এবং লেবুরসসহ ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • রাতের খাবার: মুরগির স্যুপ বা মিট বল বানিয়ে খেতে পারেন। এবং লেবুরসসহ ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • সপ্তাহের৬ষ্ঠ দিন
ডায়েটের ৬ষ্ঠ দিনে এসে গরুর মাংসের পাশাপাশি সবজি খেতে পারবেন-
  • সকালের নাস্তা: ১ বাটি মিশ্র সবজি সালাদ এবং লেবুরসসহ ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • সকাল-দুপুরের মাঝে: গরুর একটি চাপ ছোট আকারের এবং লেবুরসসহ ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • দুপুরের খাবার: মিশ্র সবজি ও গরুর মাংস যেকোনো ফর্মে খাওয়া যেতে পারে। আলু বা রুটি অন্তর্ভুক্ত করবেন না এবং লেবুরসসহ ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • রাতের খাবার: দুপুরের খাবারের অনুরূপ মিশ্র সবজি ও গরুর মাংস যেকোনো ফর্মে খাওয়া যেতে পারে। আলু বা রুটি অন্তর্ভুক্ত করবেন না এবং লেবুরসসহ ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • সপ্তাহের৭ম দিন
ডায়েটের শেষ দিনে এসে আপনি বাদামি চালের ভাতের মাড় খেতে পারবেন। সাতদিনের মাথায় আপনার শরীরে পরিবর্তন টের পাবেন-
  • সকালের নাস্তা: গমের রুটি ১টি, এক টুকরো পেঁপে এবং লেবুরসসহ ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • সকাল-দুপুরের মাঝে: আম ও কলা ছাড়া একটি ফল এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।।
  • দুপুরের খাবার: ১ বাটি ভাত সাথে ১ বাটি মিশ্র সবজি সিদ্ধ। ইচ্ছা করলে ১ টুকরা আম খেতে পারেন এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • বিকালের খাবার: ১ টি কমলা এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।
  • রাতের খাবার: ১ বাটি ভাত সাথে ১ বাটি মিশ্র সবজি সিদ্ধ এবং ২ গ্লাস পানি পান করুন।
আরও পড়ুনঃ ছেলেদের চেহারা সুন্দর করার খাবার

পরিশেষ

অতিরিক্ত ওজন কারও কাম্য নয়। যাঁরা ওজন কমানোর জন্য অনেক টাকা খরচ করেও নিজেদের ফিট রাখতে পারছেন না। কিছু চাকরিতে পদোন্নতির জন্য কর্মীর ওজন জরুরি বিষয় হিসেবে দেখা হয়। অনেক সময় বিশেষ অস্ত্রোপচারের আগে জরুরি ভিত্তিতে রোগীর ওজন কমানোর দরকার পড়ে।সূতরাং সারাজীবন একটা অভ্যাসের মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। তাহলেই কম সময়ে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য মিলবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url