চুলে কি দিলে লম্বা ও ঘন হয় | চুল পড়া বন্ধ করতে হলে কি করতে হবে

চুলে কি দিলে লম্বা ও ঘন হয় | চুল পড়া বন্ধ করতে হলে কি করতে হবে
চুলে কি দিলে লম্বা ও ঘন হয় আবার চুল পড়া বন্ধ করতে হলে কি করতে হবে, প্রায় সকলের একই প্রশ্ন। অনেকেই লম্বা চুলের স্বপ্ন দেখেন। ত্বকের যত্ন নেওয়া সহজ হলেও চুল লম্বা ও ঘন করা সত্যিই কঠিন। অনেকেই বহু চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। লম্বা চুলের স্বপ্ন দেখলেই হবে না। তার জন্য চেষ্টাও সঠিক হওয়া চাই।

অনেকের অতিরিক্ত পরিমাণ চুল পড়তে থাকে। আবার কারো কারো চুলের স্বাভাবিক বৃদ্ধি যেন থমকে যায়। আবার চুল লম্বা ও ঘন পাওয়ার ইচ্ছেও আমাদের অনেকের মধ্য়েই থাকে। চুলে কি দিলে লম্বা ও ঘন হয়? চুল পড়া বন্ধ করতে হলে কি করতে হবে? ঘরোয়া পদ্ধতিতেই কি এই সমস্যা সমাধান সম্ভব? বিস্তারিত আলোচনা করব।

আরম্ভ

ত্বকের যত্ন নেওয়ার মতোই চুলের যত্ন করাও জরুরি।সঠিকভাবে যত্ন না নেওয়ার কারণে চুলের হাল দিন দিন বেহাল হতে শুরু করে।চুল রুক্ষ ও শুষ্ক হয়ে যায়, ডগা চেরা চুল নিয়ে নাজেহাল হতে হয়। দূষণ, রোদ এর জন্য দায়ি হয়ে থাকে।প্রসাধনী ব্যবহারেও অনেক সময়ে সুফল মেলে না। তবে কিছু উপকরণ যদি চুল পরিচর্যায় ব্যবহার করতে পারেন, তা হলে চুল লম্বা ও ঘন হবে এবং চুল পড়া বন্ধ করতে পারবেন।

চুলে কি দিলে লম্বা ও ঘন হয় | চুল পড়া বন্ধ করতে হলে কি করতে হবে

চুলে কি দিলে লম্বা ও ঘন হয়?এই প্রশ্নে উত্তর খোঁজার জন্য অন্য কোথাও যাওয়ার প্রয়োজন নেই। পড়তে থাকুন যথার্থ উত্তর পেয়ে যাবেন।
  • চুলের যত্নে ডিম ও পেঁয়াজ


ডিমের মধ্য়ে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, মিনারেল এবং ভিটামিন বি কমপ্লেক্স। এইসব পুষ্টিকর উপাদান, বিশেষ করে বায়োটিন ও বি-কমপ্লেক্স ভিটামিন কিন্তু চুলের জন্য খুবই ভালো। এগুলো আপনার চুলের গোড়া মজবুত করে। তাই সহজেই চুল পড়ে না।

চুলে কি দিলে লম্বা ও ঘন হয়,সেগুলোর মধ্যে ডিম ও পেঁয়াজ অন্যতম। শরীরের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি চুল লম্বা ও ঘন করতে ডিম সত্যিই উপকারী। আধ কাপ মতো ডিমের সাদা অংশ চুলের গোড়ায় ভাল করে লাগিয়ে নিন। এটি হচ্ছে চুলে ডিম দেওয়ার নিয়ম। ১৫ মিনিট মতো অপেক্ষা করার পর ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিন, উপকার পাবেন।

চুল পরিচর্যায় প্রাকৃতিক উপাদান পেঁয়াজের রসের ব্যবহার নতুন নয়। তবে বেশ কয়েকভাবে পেঁয়াজের রসকে ভিন্ন ভিন্ন উপাদানের সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করা যায় । চুলের বৃদ্ধি ও ঘন হওয়া,চুল পড়া বন্ধ করা, খুশকির সমস্যা দূর করাসহ নানান সমস্যায় পেঁয়াজের রসের ব্যবহার অতুলনীয়। সূতরাং চুলের জন্য পেঁয়াজের উপকারিতা প্রশংসনীয়।

চুল পরিচর্যায় ডিম খুবই পরিচিত একটি উপাদান। ডিমের পুষ্টি উপাদানগুলো সরাসরি চুলের উপর ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। বিশেষত ডিমের উচ্চমাত্রার প্রোটিন চুলের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। ডিমের সাথে পেঁয়াজের রসের মিশ্রণ স্বাভাবিক ভাবেই চুলের জন্য অন্যতম উপকারী একটি মিশ্রণ।

চুলে ব্যবহার করতে একটি ডিম ভালোভাবে ফেটিয়ে এক টেবিল চামচ পেঁয়াজের রস, ৩ ফোঁটা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে নিতে হবে। এই মিশ্রণটি পুরো মাথায় ঘষে ম্যাসাজ করে পুরো মাথা ঢেকে নিতে হবে। আধা ঘন্টা অপেক্ষা করার পর চুল শ্যাম্পু করে নিতে হবে। এটি হচ্ছে চুলে ডিম দেওয়ার নিয়ম।


চুলের যত্নে ডিম ও নারকেল তেল


চুলের যত্নে ডিমের উপকারিতা সকলেরই জানা। ডিমের মধ্যে থাকা প্রোটিন চুলের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। ডিমের সাদা অংশ বা ডিমের কুসুম। চুল লম্বা ও ঘন করতে, চুল পড়া বন্ধ করতে এমনকি সিল্কি করতেও দারুণ উপকারী। অতএব চুলে ডিম লাগালে কি হয় তা বুঝতে আর অবশিষ্ট থাকেনা।ডিমের কিছু ঘরোয়া প্যাক জেনে নিন।

চুলে ডিম ব্যবহারের নিয়ম জানা প্রয়োজন।একটা ডিমের সাদা অংশের সাথে এক চা চামচ নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল মিশিয়ে ঘন করে ফেটিয়ে নিন। এগুলো চুলে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। ২০ মিনিট পর প্রথমে ঠান্ডা জলে ধুয়ে তারপর শ্যাম্পু করে নিন।

চুলে কি দিলে লম্বা ও ঘন হয়?চুল ঝলমলে করতে দামী প্রসাধনীর বদলে নারকেল তেল ব্যবহার করুন। ভাবছেন চুল পড়া বন্ধ করতে হলে কি করতে হবে? নারকেল তেলে থাকা প্রোটিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট চুলের যত্নে অতুলনীয়। পাশাপাশি বন্ধ হবে চুল পড়ার সমস্যা।

নারকেল তেলের হেয়ার প্যাক নিয়মিত ব্যবহারে চুল হবে লম্বা ও ঘন, নরম ও ঝলমলে। ১টি ডিমের সাদা অংশের সাথে ২ টেবিল চামচ নারকেল তেল মেশান। ভালো করে ফেটিয়ে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত লাগান। আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করলে চুল লম্বা, ঘনএবং সিল্কি হবে,চুল পড়া বন্ধ হবে এবং রুক্ষতা দূর হবে।

চুলের যত্নে ডিম ও অ্যালোভেরাচুলের যত্নে ডিম ও অ্যালোভেরার গুরুত্ব অপরিসীম।অ্যালোভেরা থেকে রস বানিয়ে নিন, একটি ডিম এর সাথে ফেটিং ২ টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন। আধা ঘণ্টা পর সামান্য শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। মাসে চারবার এই হেয়ার প্যাক ব্যবহার করলে চুল লম্বা, ঘন এবং ঝলমলে হবে।


চুলের যত্নে মধু ও নারকেল তেল

চুল পড়া বন্ধ করতে হলে কি করতে হবে জেনে নিন।১ টেবিল চামচ নারকেল তেলের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে রাখুন। ৩০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে নিন এবং শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। এই হেয়ার প্যাক সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন। চুল পড়া বন্ধ হবে এবং লম্বা ও ঘন হবে।

চুলের যত্নে ডিম ও লেবুএকটি লেবুর রসে কুসুম গরম নারকেল তেল মিশিয়ে প্রথমে মাথার ত্বকে ভালো মতো ঘষে নিন। এরপর একটি ডিমের সাথে এক টেবিল চামচ মধু, এক টেবিল চামচ দই, আধ চা চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে নিন। এই প্যাক চুলে ভাল করে লাগান। এক ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাক লাগালে চুল লম্বা ও ঘন হবে এবং খুসকি রূক্ষতা দূর হবে।

অন্যভাবে শ্যাম্পু করার পর এক চামচ মতো লেবুর রস ভিজে চুলের গোড়ায় ভাল করে মেখে নিন। ভিজেই চুলে শুকনো তোয়ালে জড়িয়ে আধ ঘণ্টা মতো অপেক্ষা করুন। তার পর আর চুল ভেজাবেন না। পরের দিন চাইলে এক বার শ্যাম্পু করে নিতে পারেন।

চুলের যত্নে মেথি ও ডিম | দই | লেবু |নারিকেল তেল

চুলের যত্নে সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন মেথির হেয়ার প্যাক ব্যবহার করুন। এতে চুল পড়া তো বন্ধ হবেই, পাশাপাশি ঝলমলে ও নরম হবে চুল। দূর হবে খুশকি ও চুলের আগা ফাটা। জেনে নিন কীভাবে মেথির হেয়ার প্যাক তৈরি ও ব্যবহার করবেন।

ঘুমানোর আগে মেথি ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন মেথি বেটে একটি ডিম মিশিয়ে নিন। হেয়ার প্যাকটি চুলে লাগিয়ে শাওয়ার ক্যাপ পরে নিন। ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

রাতে ২ টেবিল চামচ মেথি ৮ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এরপর বেটে আধা কাপ দইয়ের সঙ্গে মেশান। মিশ্রণটি চুলে ৩০ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে শ্যাম্পু দিয়ে ফেলুন । 

সারারাত ৩ টেবিল চামচ মেথি পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে বেটে ৪ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে নিন। শ্যাম্পু করার আগে ৩০ মিনিট প্যাকটি লাগিয়ে রাখুন।

৪ টেবিল চামচ মেথি গুঁড়া করে নিন। এর সাথে ৫ টেবিল চামচ নারিকেল তেল মিশিয়ে চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করুন। কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করার পর ২ ঘণ্টা রেখে দিন। তারপর শ্যাম্পু করে নিন।

চুলের যত্নে কলা ও নারকেল তেলএকটি পাকা কলা পেষ্ট করে ২ টেবিল চামচ নারকেল তেল মেশান। মিশ্রণটি চুলে লাগিয়ে রাখুন ৩০ মিনিট। সামান্য শ্যাম্পুর সঙ্গে পানি মিশিয়ে চুল ধুয়ে নিন।এই হেয়ার প্যাক চুল সিল্কি করতে সপ্তাহে একবার ব্যবহার করতে পারেন ।

চুলের যত্নে ভিটামিন ই ও নারকেল তেলদুটি ভিটামিন ই ক্যাপসুলের সাথে ২ টেবিল চামচ নারকেল তেল মিশিয়ে নিন। তেলের মিশ্রণ চুলের গোড়ায় ধীরে ধীরে ম্যাসাজ করুন । ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন। এই তেলের মিশ্রণ লম্বা ও ঘন করতে সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন।


  • চুলের যত্নে গ্রিন টি ও নারকেল তেল
২ টেবিল চামচ নারকেল তেল,১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল এবং ২ চা চামচ গ্রিন টির লিকার মেশান। মিশ্রণটি চুলে ১ ঘণ্টা লাগিয়ে রাখুন। চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন ।ইহা চুল পড়া বন্ধ করতে সাহায্য করবে।
  • চুলের যত্নে আমলকি ও অলিভ অয়েল
চুলের যত্নে আমলকির ভূমিকা যথেষ্ট। আধ কাপ আমলকি গুঁড়োর সাথে ১ চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণে ডিমের সাদা অংশ মিশিয়ে নিন। তারপর চুলে ঘষে ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ৩০ মিনিট পর শুকিয়ে ধুয়ে নিন। সপ্তাহে ২ দিন ব্যবহার করলে চুল পড়া বন্ধ হবে।
  • চুলের যত্নে নিমপাতা
চুল লম্বা করার আরও একটি উপায় হতে পারে নিমপাতা। নিমপাতার বেটে চুলে ভাল করে ঘষে নিন। জমে থাকা ময়লা দূর করতে নিমপাতার জুড়ি মেলা ভার। তা ছাড়া চুল বড় করতেও নিমপাতা যথেষ্ট উপকারী।
  • চুলের যত্নে হালকা গরম তেল
হালকা কুসুম ​গরম তেল মালিশ করলে রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। রক্ত সঞ্চালন ঠিকঠাক হলে চুলের গোড়ায় অক্সিজেন সরবরাহও ঠিক হয়, ফলে চুলের বৃদ্ধিও হয়।

একটি পাত্রে পরিমাণ মতো নারকেল তেল নিন। তা হালকা গরম করে নিন। তুলার সাহায্যে চুলের গোড়ায় ভালো করে তেল লাগিয়ে নিন।তারপর ধীরে ধীরে আঙুল দিয়ে মালিশ করুন। নারকেল তেলের পরিবর্তে অলিভ অয়েলও ব্যবহার করতে পারেন। ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। ইহা চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

চুল থেকে ডিমের গন্ধ দূর করার উপায়

রুক্ষ চুলের যত্নে ডিম অতুলনীয় কিন্তু অনেকে ডিমের গন্ধ ভীষণ অপছন্দ করেন। তারা ডিমের প্যাক লাগিয়ে চুল ধুয়ে ফেলার পর সুগন্ধী লেবুর রস মাথায় দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলতে পারেন। এতে ডিমের গন্ধ চলে যাবে।

চুল তাড়াতাড়ি লম্বা করার উপায়

লম্বা চুল ভালোবাসেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। কিন্তু নানা কারণে সেটা হয়ে ওঠে না। এখানে থাকছে চুল তাড়াতাড়ি লম্বা করার উপায় ।

  • লম্বা চুল পেতে চাইলে চুলে নিয়মিত তেল মালিশ করতে হবে। তেল দিয়ে মাথার ত্বকে ম্যাসাজ করতে হবে। এর ফলে মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল বাড়বে। চুলের গোড়াতে পুষ্টি আগের তুলনায় বেশি পরিমাণে পৌঁছাবে। ফলস্বরূপ চুলের বৃদ্ধি দ্রুত হবে ।
  • চুলের আগা ফাটার ইতিহাস যাদের আছে তারা ছয় থেকে আট সপ্তাহ পর পর ট্রিম করালে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন। আগা ফাটা সমস্যা কেটে গেলে চুল বৃদ্ধির পরিমাণও বাড়বে। দেখতেও সুন্দর লাগবে।
  • চুলের বৃদ্ধির জন্য ভিটামিনের অবদানকে অস্বীকার করার উপায় নেই। প্রয়োজনীয় ভিটামিন না পেলে চুলের বৃদ্ধি কমে যেতে পারে। অ্যান্টিঅক্সিডান্ট আর ভিটামিন বি সমৃদ্ধ ওষুধগুলো খেলে চুল পুষ্টি পাবে এবং স্বাভাবিক গতিতে বাড়বে।
  • শ্যাম্পু আবর্জনা পরিষ্কার করে চুলের বৃদ্ধির পথ সহজ করে দেয়। তবে সে জন্য আপনাকে সঠিক শ্যাম্পুটি খুঁজে নিতে হবে। আপনার চুলের ধরণ অনুসারে কোন শ্যাম্পুটি উপযুক্ত, সেটা নিজে বাছাই করতে না পারলে বিউটিয়ানের সাহায্য নিতে পারেন।
  • চুল ধোয়ার সময় গরম পানি ব্যবহার করলে চুলের আর্দ্রতা হারিয়ে যাবে। এই সমস্যা এড়াতে চুল ধোয়ার জন্য সব সময় হালকা ঠান্ডা পানি ব্যবহার করুন। যাদের ঠান্ডার সমস্যা নেই, তারা সম্ভব হলে ঠান্ডা পনিতে চুল খানিক সময় ভিজিয়েও রাখতে পারেন। এতে চুল স্বাভাবিক গতিতে বৃদ্ধি পাবে।
  • চুল স্টাইলিং করার যন্ত্রপাতি আসলে চুলের ক্ষতিই করে। তাই এগুলো যত কম ব্যবহার করা যায়, তত ভালো। চুল স্ট্রেটনার বা কার্লিং আয়রন গরম করে ব্যবহার করতে হয় বলে চুল দুর্বল আর ভঙ্গুর হতে থাকে। তাতে চুল লম্বা হওয়ার গতি কমে যায়।
  • চুল ভালো রাখার জন্য মালিশের চেয়ে ভালো আর কিছু নেই। এটা মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল বাড়ায় যা চুলের ফলিকলে পুষ্টি উপাদান পৌঁছে দিতে সাহায্য করে। মাথার ত্বকে কেবল আঙুল দিয়ে মালিশ করুন। এটা মাথার ত্বক সুস্থ রাখে ও দ্রুত চুল বড় করতে সাহায্য করে।
  • গোসলের সময় মাথা মালিশ করার মাধ্যমে দিন শুরু করুন। গোসলের সময় মাথার ত্বকে আঙুল বুলিয়ে মালিশ করুন। ভালো ফলাফলের জন্য ঘাড়ের পেছন থেকে চুলের লাইন অনুযায়ী সামনের দিকে মালিশ করা শুরু করুন।
  • চুলের আগা শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যাওয়ার পরেও আগা ছাঁটতে চান না। যার মূল কারণ হল চুল ছোট হয়ে যাওয়া। তবে সত্যি যদি আপনি চুল বড় করতে চান তাহলে আগা ছাঁটুন। প্রতি ছয় থেকে আট সপ্তাহ পরপর চুলের আগা ছাঁটলে চুল দ্রুত বড় হবে।
  • চুলের জন্য প্রয়োজনীয় সঠিক পুষ্টি সম্পর্কে অনেকেরই সঠিক ধারণা নেই। চুল ভালো রাখার জন্য সঠিক ভিটামিন বেছে নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন বি চুল শক্তিশালী রাখে। যে সকল সম্পূরকে বায়োটিন থাকে তা চুলকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল রাখতে সহায়তা করে।
  • হয়ত জেনে থাকবেন যে, কন্ডিশনার চুল ভালো রাখে। কীভাবে রাখে তা অনেকেরই অজানা। শ্যাম্পু প্রতিদিনকার চুলের ময়লা ও ধূলাবালি দূর করে এবং কন্ডিশনার চুলে পুনরায় পুষ্টি যুগিয়ে স্বাস্থ্যকর ও উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
  • চুল পরিষ্কার করতে ঠাণ্ডা পানি ব্যবহার করুন। এটা চুলে দ্রুত পরিবর্তন আনে। শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করার পরে চুল ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এটা চুলের আর্দ্রতা হারিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে। গরম পানি দিয়ে ধোয়া হলে দুর্বল ও রুক্ষ হয়ে যায়। তাই চুলে গরম পানির ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
  • হেয়ার স্টাইলিং টুলস যেগুলো তাপ প্রয়োগ করে যেমন- স্ট্রেইটনার, কার্লিং আয়রন ইত্যাদি। এগুলো চুলের ক্ষতি করে, দুর্বল ও ভঙ্গুর করে ফেলে। তাই এই ধরনের স্টাইলিনং যন্ত্র ব্যবহার বন্ধ করুন। আর যদি ব্যবহারের করতেই হয় তাহলে আগে তাপ নিরোধক প্রসাধনী ব্যবহার করে নিন।
অতএব, চুল তাড়াতাড়ি লম্বা করার উপায় গুলো জেনে আপনার চুলের পরিচর্যা করুন, সুফল পাবেন।

চুল লম্বা করার জন্য কি খেতে হবে

অনেকেই হয়তো জানেন না যে, ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্য অনেকটাই নির্ভর করে পেটের উপর। তাই পাতে রাখতে হবে এমন কিছু খাবার যা চুলকে সুন্দর করবে। জানুন সুন্দর চুলের জন্য কী খাবেন।

  • চুল ঘন করতে চাইলে সঠিক খ্যাদ্যাভ্যাসও জরুরি। এজন্য পাতে রাখুন প্রোটিন, ফ্যাটি অ্যাডিস, ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও আয়রনসমৃদ্ধ খাবার।
  • স্বাস্থ্যজ্জ্বল চুল পেতে সাহায্য করে ভিটামিন। প্রথমেই জেনে নেওয়া যাক চুলের জন্য কোন-কোন ভিটামিন সবচেয়ে জরুরি। চুলের জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন হল বায়োটিন অর্থাৎ ভিটামিন বি-৭, ভিটামিন সি, ভিটামিন ডি, ভিটামিন এ এবং ভিটামিন ই। এছাড়াও কিছু মিনারেল রয়েছে যা চুলের জন্য ভালো।
  • চুলের ফলিকলের গঠনে সাহায্য করে বায়োটিন। তাই প্রতিদিনের ডায়েটে বেশী করে বায়োটিনযুক্ত খাবার রাখতে হবে। ডিমে প্রচুর পরিমাণে বায়োটিন রয়েছে। এছাড়া খেতে পারেন দুধ, মাংস, পালং শাক ও ব্রকোলি।
  • চুলের বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ভিটামিন ডি ও সি। এছাড়া চুলের গোড়া মজবুত করতে সাহায্য করে ভিটামিন ডি। অন্যদিকে ভিটামিন সি সুস্থতা বজায় রাখে। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা চুলের রূপ ফেরায়। এই দুই ভিটামিন পেতে খেতে হবে কড লিভার অয়েল, সামুদ্রিক মাছ। ভিটামিন সি-এর জন্য খেতে হবে কমলালেবু. পাতি লেবু, বাতাবি লেবু। সবজির মধ্য়ে টমেটো, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি।
  • চুলের রূপ ধরে রাখতে সাহায্য করে ভিটামিন এ। এছাড়া চুলের বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে। গাজর, কুমড়ো, লাল টমেটো, মিষ্টি আলু এই শাকসবজিতে ভিটামিন এ পাওয়া যায়। তাই এই সবজিগুলি বেশী করে খান।
  • ঘন লম্বা চুলের জন্য ভীষণ জরুরি ভিটামিন ই। আমন্ড. অ্যাভাকাডো, পিনাট বাটার, রেড বেল পেপার, মাছে এই ভিটামিন রয়েছে। তাই প্রতিদিন এই খাবারগুলো ডায়েটে যোগ করুন ।
সূতরাং চুল লম্বা করার জন্য কি খেতে হবে তা আর বুঝতে বাকি থাকার কথা নয়।

৭ দিনে চুল লম্বা করার উপায় 

চুল ভালো রাখার জন্য যথেষ্ট যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। ঠিকভাবে যত্ন নিতে না পারলে চুল পড়াসহ আরও কিছু সমস্যায় জর্জরিত হয়ে যান। এসব সমস্যার অন্যতম কারণ হয় অযত্ন, দূষণ ও আবহাওয়া। কারও কারও ক্ষেত্রে গুরুতর অসুখ বা অন্যান্য সমস্যাও এর কারণ হয়ে উঠতে পারে। ৭ দিনে চুল লম্বা করার উপায় এর সঠিক সমাধান আছে চুলে কি দিলে লম্বা ও ঘন হয় এই অংশে।
  • প্রতি রাতে শুতে যাওয়ার আগে অবশ্যই মাসাজ করে নিন। চুলের জট ছাড়িয়ে নেওয়ার পর হাতের আঙুলের সাহায্যে সামান্য চাপ দিয়ে ধীরে ধীরে মালিশ করতে থাকুন। এতে আপনার রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়। চুলের গোড়ায় পুষ্টি পায়। চুলের বৃদ্ধি হয় দেখার মতো।
  • সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন চুলে তেল মাখা অভ্যাস করুন। এর জন্য আপনাকে খুব সহজ একটি নিয়ম মেনে চলতে হবে, হাতের তালুতে সামান্য পরিমাণ তেল নিন। নারকেল তেল বা আমন্ড অয়েল নিতে পারেন। আঙুলে সামান্য চাপ দিয়ে ঘষে নিন।

অল্প সময়ে দ্রুত চুল লম্বা করার উপায় 

চুল লম্বা করার কিছু ঘরোয়া কৌশল রয়েছে। সকালের কিছু অভ্যাসেই ‘কেশবতী রাজকন্যা’ হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। অল্প সময়ে দ্রুত চুল লম্বা করার উপায় জেনে আপনার চুলের পরিচর্যা করুন।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেকেই পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খান। তবে এই পানীয় শুধু ওজন কমায় না, একসাথে চুলও লম্বা করে। চুল হোক কিংবা ত্বক, যত্ন নিতে হলে ভিতর থেকে আর্দ্র থাকা চাই। সে ক্ষেত্রে এই পানীয় বেশ উপকারী। রোজ সকালে নিয়ম করে খেলে উপকার পাবেন।
  • মাথার ত্বকে রক্ত সঞ্চালন সচল থাকলেই চুল দ্রুত লম্বা হতে পারে। তার জন্য মাথার ত্বকে মালিশ করা জরুরি। তবে একেবারেই শুধু হাতে নয়।তেলের সাথে গরম জলে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ বানিয়ে নিন। সেই মিশ্রণটি অল্প অল্প করে নিয়ে মাথায় মালিশ করতে থাকুন। প্রতিদিন সকালে করলে চুল লম্বা হতে বাধ্য।
  • সকাল থেকেই যদি মনে উদ্বেগের মেঘ ঘুরে বেড়ায়, তার প্রভাব শুধু শরীরে নয়, চুল এবং ত্বকের উপরেও পড়ে। বিশেষ করে চুলের বৃদ্ধিতে মানসিক অবসাদ অন্যতম বাধা। তাই মন থেকে সব উদ্বেগ একেবারে দূরে সরিয়ে রাখুন। আনন্দে থাকার চেষ্টা করুন।
  • পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে অনেক সময়ে চুল বড় হতে চায় না। আর সব ধরনের পুষ্টির অন্যতম উৎস হল স্বাস্থ্যকর খাবার। তাই সকালের নাস্তায় রাখতে হবে পুষ্টিকর কিছু খাবার। শাকসব্জি, ফলে মতো খাবার সকালের দিকে বেশি করে খান।
  • সকালের শরীরচর্চার বহুমুখী উপকারিতা রয়েছে। স্বাস্থ্যের যত্ন তো হচ্ছেই, সেই সঙ্গে রূপচর্চাও হচ্ছে। চুল বড় করতে নিয়মিত শরীরচর্চার কোনও বিকল্প নেই। শরীরচর্চা করলে সারা শরীরের রক্তচলাচল ভাল থাকে। ফলে এমনিতেই চুল লম্বা হতে শুরু করে।

চুল লম্বা করার তেলের নাম । চুল গজানোর তেলের নাম

টাক পড়ে যাওয়ার বেশ কিছু কারণ থাকে। বংশগত সমস্যা, বয়সজনিত, অতিরিক্ত চুল পড়া, হরমোনের সমস্যা—এমন বহু কিছু থাকে টাক পড়ে যাওয়ার নেপথ্যে। তবে নেপথ্যে যে কারণই থাক না কেন, এর সমাধান লুকিয়ে রয়েছে কয়েকটি তেলে। চলুন জেনে নেয়া যাক চুল লম্বা করার তেলের নাম বা চুল গজানোর তেলের নাম গুলো–
  • নারকেল তেল
চুলের যত্নে নারকেল তেলের উপকারিতা নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার নেই। তবে টাকে চুল গজানোর ব্যাপারেও কিন্তু এই তেলের উপর ভরসা রাখতে পারেন। নারকেল তেলে রয়েছে ফ্যাটি অ্যাসিডের মতো প্রয়োজনীয় উপাদান। টাক পড়তে শুরু করলে দেরি না করে নারকেল তেল মাখতে শুরু করুন।
  • ক্যাস্টর অয়েল
রিসিনোলেইক অ্যাসিড সমৃদ্ধ এই তেলের রয়েছে অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা মাথার ত্বকে রক্ত চলাচল সচল রাখতে সাহায্য করে। এতে চুলের স্বাস্থ্যও ভালো থাকে, নতুন চুল গজায়। যদি দেখেন টাক পড়তে শুরু করেছে, তবে এই তেল ব্যবহার করা শুরু করুন, উপকার পাবেন।
  • অলিভ অয়েল
ওজন কমাতে অনেকেই অলিভ অয়েল দিয়ে খাবার তৈরি করে খান। তবে টাক পড়ার সমস্যা দেখা দিলেও কিন্তু ভরসা রাখতে পারেন এই তেলের ওপর। ভিটামিন এ এবং ই সমৃদ্ধ জলপাই তেল নতুন করে চুল গজাতে সাহায্য করে।
  • কাঠবাদাম তেল
ভিটামিন ই, ডি-র মতো উপকারী উপাদান সমৃদ্ধ কাঠবাদাম তেল নতুন চুল গজাতে দারুণ সাহায্য করে। হঠাৎ যদি খুব বেশি পরিমাণে চুল উঠতে থাকে, তাহলে দেরি না করে কাঠবাদাম তেল ব্যবহার করে দেখতে পারেন। উপকার পেতে পারেন।
  • ল্যাভেন্ডার অয়েল
অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি এবং অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদান সমৃদ্ধ এই তেল চুল ঝরার সমস্যা কমায়। এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেই টাক নিয়ে অস্বস্তিতে পড়তে হবে না।
  • ক্যাস্টর অয়েল
এই তেলে রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল উপাদান। যা নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। অনেকের চুল ঘন হলেও লম্বা হতে চায় না কিছুতেই। সে ক্ষেত্রে এই তেল বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
  • রোজমেরি অয়েল
ক্ষতিগ্রস্ত চুলের যত্ন নেয় রোজমেরি তেল। খুশকির সমস্যা যাদের রয়েছে, এই তেলে সমাধান আছে। এই তেলের রোজমেরিক এবং ক্যাফেইক অ্যাসিড মাথার ত্বকের রক্তসঞ্চালন সচল রাখে। ফলে চুল পড়ার পরিমাণ অনেকে কমে। সেই সাথে চুল লম্বাও হয়। নারকেল তেল অথবা অলিভ অয়েল সাথে কয়েক ফোঁটা রোজমেরি অয়েল মিশিয়ে চুলে মাখতে পারেন, উপকার পাবেন।
  • পেঁয়াজের তেল
চুলের বেশ কিছু সমস্যার সমাধান লুকিয়ে রয়েছে এই তেলে। এতে রয়েছে ভিটামিন সি, বি, অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল উপাদান, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামের মতো উপকারী সব উপাদান। এগুলি চুলে পুষ্টি জোগায়। চুল লম্বা হতে সাহায্য করে। পেঁয়াজ তেলের নিয়মিত ব্যবহারে চুল কম পড়ে। চুল মসৃণ হয়। ধৈর্য ধরে ব্যবহার করতে পারলে লম্বা চুলের স্বপ্নও সত্যি হবে।

অবশেষে বলতেই হয়, চুল লম্বা করার তেলের নাম অথবা চুল গজানোর তেলের নাম জেনে আপনার যেটি প্রয়োজন মনে হয় সেটি ব্যবহার করুন।

পরিশেষ

পরিশেষে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারে যে,ঘন লম্বা চুলের স্বপ্ন কমবেশি সব মেয়েরাই দেখেন। তবে খুব কম জনেরই সেই স্বপ্ন পূরণ হয়। তবে এতে হতাশ হওয়ার কোনও কারণ নেই। কারণ সঠিক উপায়ে পরিচর্যা করলেই বন্ধ হবে চুল পড়া, হবে লম্বা, ঘন ও সুন্দর।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

আমাদের ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url